গত বছর কোটা সংস্কারকে কেন্দ্র করে ছাত্র আন্দোলনের জেরে উত্তাল হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। পরবর্তী সময়ে সেই ছাত্র আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। তারফলে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। অথচ সেই অস্থির পরিস্থিতিতেও ভারতীয় নাগরিকদের সঙ্গে বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে বিয়ের সংখ্যা ছিল গত কয়েক বছরের তুলনায় অনেকটাই বেশি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যে ১১১ টি বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে, যা ২০২৩ সালে তুলনায় দ্বিগুণ।
আরও পড়ুন: নেমন্তন্ন করেননি বাবাকে, বাঙালি নায়িকার সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ে সরালেন প্রতীক বব্বর
টাইমস অফ ইন্ডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, যে ১১১টি বিয়ে হয়েছে তার মধ্যে ১০০টির ক্ষেত্রে হলেন বাংলাদেশি কনে এবং বাকি টির ক্ষেত্রে ১১ জন ভারতীয় কনে। তাঁরা বাংলাদেশি পুরুষদের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। যদিও এই সংখ্যাটি সর্বোচ্চ ছিল ২০১৯ সালে। ওই বছর দুই দেশের নাগরিকের মধ্যে ৪৮৬টি বিয়ে হয়েছিল। প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালে বিয়ে হওয়া কতজন বাংলাদেশি ভারতে থাকবেন তা এখনও জানা যায়নি। তবে আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, যে এর মধ্যে অধিকাংশই ভারতে থাকবেন। নাগরিকত্ব আইনের কারণে তাদের অনেকেই ভারতে থাকতে পছন্দ করবেন বলে এক আধিকারিক জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী, যদি কোনও ব্যক্তি পুরুষ হোক বা মহিলা ভারতীয় নাগরিকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে এবং বিয়ের রেজিস্ট্রির আগে ৭ বছর ধরে বসবাস করেন তাহলে তিনি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেন। তাছাড়া, যাদের বাবা-মা ভারতীয় তাদের সন্তানরা জন্মগত অধিকারের ভিত্তিতে ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে পারেন।
জানা গিয়েছে, গত ৫ বছরে ৪৮৬ জন বাংলাদেশি বাংলায় ভারতীয় সঙ্গী বেছে নিয়েছেন। একজন কর্মকর্তা বলেন,ঐতিহ্যগতভাবে বেশি বাংলাদেশি মেয়ে ভারতীয় স্বামীর সঙ্গে এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পছন্দ করেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে বাংলায় ৪১০ জন বাংলাদেশি মহিলা ভারতীয় পুরুষদের বিয়ে করেছেন। সেখানে ৭৬ জন বাংলাদেশি পুরুষ ভারতীয় কনেদের নিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে গিয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ১১১টি আবেদনের মধ্যে ৭৯ জন কনে ছিলেন বাংলাদেশি হিন্দু, ১৬ জন মুসলিম এবং পাঁচজন খ্রিস্টান। এদিকে, বাংলায় বিয়ে করা বাংলাদেশি বরদের মধ্যে ৯ জন হিন্দু এবং মাত্র দুজন মুসলিম ছিলেন।২০২৩ সালে, বাংলাদেশি বর-কনেদের বেশিরভাগই হিন্দু ছিলেন। কিন্তু, ২০২৪ সালের তুলনায় মোট বিয়ের আবেদনের সংখ্যা অর্ধেকেরও কম, যা ৫৪ জন। এর মধ্যে ৪৪ জন কনে এবং ১৩ জন বর ছিলেন।