প্রিয়াঙ্কা দেব বর্মণ
তাঁরা বাংলাদেশের নাগরিক। অথচ তাঁদের ফিরিয়ে নিচ্ছে না বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষা বাহিনী (বিজিবি)। তার জেরে গত ১১ জুলাই থেকে ত্রিপুরা সিপাহীজালার মিঞাপাড়া সীমান্তে আটকে রয়েছেন ১২ জন বাংলাদেশি।
সেই দলে রয়েছেন কুলসুম বিবি (৬০), বারিসদা বেগম (৩৫), রাজিতা বেগম (৩০), মহিনুদ্দিন (২২), সঞ্জনা বেগম (২১), শাকিল মিঞা (১৪), রেভানা খাতুন (১২), সাকিব (১১), রাজা হোসেন (৯), রশমি আখতার (৪), আলিয়া খাতুন (৩) এবং রাজাউল হোসেন (২)।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) তদন্ত অনুযায়ী, সীমান্তে আটকে থাকা বাংলাদেশিরা আদতে বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিএসএফের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ১১ জুলাই সন্ধ্যা ছ'টা নাগাদ সীমান্তে ২০৩৯/১২-এস পিলারের কাছে এক পুরুষ, চার মহিলা এবং সাত শিশুর একটি দলের হদিশ মেলে। বিএসএফের টহলদারি দলের কাছে জানান, তাঁরা কুমিল্লা জেলার চাঁদিনা থানার অন্তর্গত হরিকুল্লা গ্রামের বাসিন্দা। তাঁদের বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে বিএসএফ।
যদিও বাংলাদেশি নাগরিকত্ব প্রমাণের উপযুক্ত নথি না থাকার অভিযোগে ওই ১২ জনকে ফেরায়নি বিজিবি। তা নিয়ে গত ১১ জুলাই দু'দেশের সীমান্তরক্ষা বাহিনীর মধ্যে ফ্ল্যাগ মিটিং হয়। সেখানে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দেয় বিজিবি। তিন দিন পর আরও একটি ফ্ল্যাগ মিটিং হয়। ১২ জনের ছবি, বাড়ির ঠিকানা, বংশের পরিচয়, বাংলাদেশে থাকা ছেলের সঙ্গে কুলসুম বিবির ফোনে কথা বলার একটি অডিয়ো টেপ-সহ বিভিন্ন নথি তুলে দেয় বিএসএফ।
ভারতীয় সুরক্ষা বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, দু'দেশের বাহিনীর সমঝোতা অনুযায়ী আন্তর্জাতিক সীমান্তে ধরা পড়া মহিলা এবং শিশুদের বিএসএফ বা বিজিবির হাতে তুলে দিতে হবে। নাগরিকত্বের ভিত্তিতে তাঁদের সংশ্লিষ্ট দেশে পাঠানো হয় এবং তাঁদের মানব পাচারের শিকার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিএসএফের অভিযোগ, ওই ১২ জনের নাগরিকত্ব নির্ধারণের প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃতভাবে দেরি করছে বিজিবি। আপাতত মানবিকতার খাতিরে তাঁদের সীমান্তের এপারে প্রাথমিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিএসএফ।