ভুয়ো নথি পেশ করে আধার কার্ড নেওয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে নাগরিকত্ব প্রমাণের নির্দেশ দিল ইউআইডিএআই। তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। অনেকে এই নির্দেশের পিছনে জাতীয় নাগরিক পঞ্জির যোগসূত্র দেখছেন। ঘটনাটি হায়দরাবাদের।
আরও পড়ুন : নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য ১২৭ জনকে কি নোটিশ পাঠাল আধার কর্তৃপক্ষ? শুরু বিতর্ক
বছর ৪০-এর ওই মহম্মদ সাত্তার খানকে আগামী বৃহস্পতিবার হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আধার কর্তৃপক্ষের তদন্তকারী অফিসার ও ডেপুটি ডিরেক্টর অমিতা বিন্দ্রু। ভারতের নাগরিক প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত আসল নথি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন : এনপিআর-এ ‘না’ মধ্যপ্রদেশের, আগে ফর্ম যাচাই করতে চান উদ্ধব
অমিতা জানান, পেশায় অটোটালক ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভুয়ো নথি জমা দিয়ে আধার কার্ড নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের সত্যতা জানতে তদন্ত করা হচ্ছে। আধার কর্তৃপক্ষের দাবি, ১২৭ জনের বিরুদ্ধে ভুয়ো নথি দিয়ে আধার নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। পরে জানা যায়, ওরা অনুপ্রবেশকারী।
আরও পড়ুন : NPR আসলে কী? NRC-এর সঙ্গে পার্থক্য কী?, জেনে নিন ভিডিয়োয়
গত ৩ ফেব্রুয়ারি তারিখে দেওয়া নোটিশে বলা হয়েছে, 'আপনি যদি ভারতের নাগরিক না হন, তাহলে প্রমাণ করুন যে আপনি বৈধভাবে ভারতীয় ভূ-খণ্ডে এসেছেন ও আপনার এখানে থাকাটা বৈধ।'
আরও পড়ুন : এনআরসি হলে কী কী নথি লাগবে? জানাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক
নোটিশে জানানো হয়েছে, সাত্তার যদি তদন্তে নিজে না আসেন বা ভারতীয় হওয়ার স্বপক্ষে উপযুক্ত নথি দেখাতে না পারেন তাহলে বিষয়টি নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে পদক্ষেপ করা হবে। সাত্তারের আধার কার্ডও অচল হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন : NPR-NRC-এর মধ্যে ফারাক কী? কেন বিরোধিতা রাজ্যের? জানুন খুঁটিনাটি
যদিও সাত্তারের আইনজীবী মুজাফেরুল্লা খান জানান, তাঁর মক্কেলের বাবা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা অলউইন ইন্ড্রাস্টিতে কাজ করতেন। তাঁর মা এখন পেনশন পান। আইনজীবীর কথায়, 'যেখানে অলউইনের কারখানা ছিল, সেই সনৎনগরে ওরা থাকতেন। পরে ওল্ড সিটির দিকে চলে আসেন। বিদেশি হিসেবে কীভাবে তাঁকে সন্দেহ করতে পারে আধার কর্তৃপক্ষ?'
আরও পড়ুন : অসমে 'অফলাইন' হয়ে গেল NRC সংক্রান্ত তথ্য
মুজাফেরুল্লার দবি, আইনে স্পষ্ট বলা আছে যে ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আধার যথার্থ নথি নয়। পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব যাচাইয়ের কোনও অধিকার নেই আধার কর্তৃপক্ষের। তিনি বলেন, 'নোটিশে কোথাও বলা নেই কী ভিত্তিতে তাঁর নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। ভারতীয় প্রমাণের জন্য কী কী নথি লাগবে, সেটাও স্পষ্টভাবে বলা নেই। তবে এই নোটিশের বিরুদ্ধে আমরা তেলাঙ্গানা হাইকোর্টে যাব।' এনআরসির অঙ্গ হিসেবে আধার কর্তৃপক্ষ এই নোটিশ পাঠিয়েছে কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন সাত্তারের আইনজীবী।
আরও পড়ুন : বাড়ি এসে কেউ কাগজ দেখতে চাইলে স্ট্রেট বার করে দিন, বলুন, যান, ভাগুন: মমতা
যদিও সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে আধার কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য নোটিশ পাঠানো হয়নি। ভুয়ো নথি পেশ করে আধার তৈরির জন্য তাঁকে ডাকা হয়েছে। পাশাপাশি শুধু ওই ব্যক্তিকে নয়, পুলিশের থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পর হায়দরাবাদ অফিস থেকে ১২৭ জনকে একই কারণে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন : দিল্লি ভোটের ফলে প্রমাণিত CAA ও NRC প্রত্যাখ্যান করেছে মানুষ, বললেন মমতা
আধার কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে যে প্রত্যেকেই অনুপ্রবেশকারী ও তাঁরা আধার নম্বর পাওয়ার শর্ত পূরণ করেন না। আধার কর্তৃপক্ষের তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, 'নাগরিকত্ব (প্রমাণের) কোনও নথি নয় আধার। ১২ সংখ্যা কার্ডের জন্য আবেদন জানানোর ১৮২ দিন আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ভারতে ছিলেন কিনা, তা নির্ধারণ করার দায়িত্ব আধার কর্তৃপক্ষকে দিয়েছে আইন।'
যদিও সংবাদসংস্থা এএনআই ও আইএএনএসের খবর, ১২৭ জনের নোটিশেই ভারতের নাগরিক প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত আসল নথি নিয়ে যাওয়ার কথা হয়েছে। ফলে আধার কর্তৃপক্ষের সাফাইয়ের বিতর্ক তো কমেইনি, উলটে বাড়ছে।
আরও পড়ুন : প্রতিবাদের ভাষায় যুবভারতীতে মিশে গেল লাল-হলুদ ও সবুজ-মেরুন