নৃশংস ঘটনা ঘটল রাজস্থানে। ১৪ বছর বয়সি এক কিশোরীকে গণধর্ষণ করে খুন করার পর পুড়িয়ে দেওয়া হল দেহ। ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের ভিলওয়ারায়। সেখানে একটি অবৈধ কয়লা চুল্লিতে কিশোরীর দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ঘটনায় ইতিমধ্যে ওই এলাকার একটি কয়লা চুল্লিতে কাজ করা পাঁচ শ্রমিককে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ৭ দিনের লড়াই শেষ, মৃত্যুর কাছে হার মানলেন কোচবিহারে গণধর্ষণের শিকার নাবালিকা
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ওই কিশোরী ছাগল চরাতে গিয়েছিল। কিন্তু, সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার পরেও বাড়ি না ফেরায় চিন্তিত হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করতে শুরু করেন। পরে রাতে পরিবারের সদস্যরা এলাকার চুল্লির একটির কাছে মেয়েটির জুতো দেখতে পান। চুল্লির ভিতরে উঁকি মারতেই তাঁরা দেখেন কিশোরীর চুড়ি ও হাড় পড়ে রয়েছে।
এই ঘটনায় স্থানীয়রা এই অপরাধে জড়িত থাকার সন্দেহে কয়েকজনকে ধরে বেধড়ক মারধর করেন। পরে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেন। তাদের আটক জিজ্ঞাসাবাদ করে কোটরি থানার পুলিশ। এই ঘটনায় এসএইচও বলেন, ওই এলাকায় পরপর পাঁচটি চুল্লি রয়েছে এবং বৃহস্পতিবার রাতে সেগুলির মধ্যে একটি জ্বলছিল। সাধারণত এই চুল্লিগুলি রাতের দিকে বন্ধ থাকে। স্থানীয়রা ওই চুল্লিতে আগুন দেখতে ওই চুল্লির কাছে যান। সেখান থেকে তাঁরা তারা মেয়েটির চুড়ি এবং কিছু হাড় দেখতে পান।
এই ঘটনার পরেই ওই অবৈধ চুল্লিগুলি ভেঙে ফেলা হয়েছে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন বিজেপি নেতা কালুলাল গুর্জার। তিনি নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে জানান, মেয়েটিকে ধর্ষণ করে তার দেহ চুল্লিতে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তোলেন বিজেপি নেতা। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ এই ঘটনায় তৎপরতার সঙ্গে পদক্ষেপ করেনি।
এদিকে, এই ঘটনার পরেই রাজস্থান স্টেট কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটসের চেয়ারপার্সন সঙ্গীতা বেনিওয়াল একটি তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন। এই কমিটি তথ্য সংগ্রহের পর তাঁর কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দেবে। তিনি এডিজি (সিভিল রাইটস) এবং পুলিশ সুপারকে একটি চিঠিও লিখেছেন। তাঁদের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন তিনি । নির্মম এই ঘটনার পরেই বিরোধী বিজেপি এই ঘটনায় সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেছে এবং মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি করেছে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সিপি জোশী বলেছেন, ‘ঘটনাটি ভয়াবহ। এমন ঘটনা দেশের কোথাও ঘটেনি। এমন ঘটনায় রাজস্থান কলঙ্কিত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের পদত্যাগ করা উচিত।’ জোশীর নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের একটি কমিটি গ্রামে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে। পাশাপাশি বিজেপির তরফে এলাকার পুলিশ সুপার আদর্শ সিধুকে সাসপেন্ড করার দাবি জানানো হয়েছে।
যদিও ঘটনাস্থল মেয়েটির মাথার খুলি এবং কঙ্কালের অন্যান্য অংশ উদ্ধার হয়নি। এই অবস্থায় অভিযুক্তরা দেহ টুকরো-টুকরো করে চুল্লি সহ বিভিন্ন স্থানে ফেলে দিয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির। পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, ১০ জন এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে এবং বাকি পাঁচজনের খোঁজ চলছে। পুলিশ গণধর্ষণ এবং হত্যার মামলাও নথিভুক্ত করেছে।