প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশ। রাজ্যের বহু জায়গায় ধস নেমে মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের। গত ১৪ অগস্ট হিমাচল প্রদেশের সিমলার শিবমন্দিরে ধস নেমেছিল। এখনও পর্যন্ত সেখানে উদ্ধারকার্য চলছে। রবিবার পর্যন্ত ওই শিব মন্দির থেকে ১৭ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। যার মধ্যে একই পরিবারের দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। ৭ সদস্যের ওই পরিবারের আরও ৩ জনের দেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন হিমাচল প্রদেশ সরকারের মুখ্য সচিব প্রবোধ সাক্সেনা। সেখানে তৎপরতার সঙ্গে উদ্ধারকার্য চালানো হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: শিমলায় বিপর্যয়, প্রবল বৃষ্টি, নামছে ধস, পর্যটকদের জন্য বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
মন্দিরে ধস নামার পরেই উদ্ধার কার্য শুরু হয়। তবে লাগাতার বৃষ্টির ফলে উদ্ধারকার্য ব্যহত হয়। এখনও পর্যন্ত সেখানে পুরোপুরি উদ্ধারকার্য সম্পন্ন হয়নি। মুখ্য সচিব জানিয়েছেন, উদ্ধার কাজ সম্পন্ন হতে আরও ২ থেকে ৩ দিন সময় লেগে যাবে। অন্যদিকে, ধসের কারণে বহু রাস্তা বন্ধ রয়েছে। এই অবস্থায় কুলু এলাকার রাস্তা দ্রুত গতিতে মেরামত করা হচ্ছে। এই রাস্তা দীর্ঘদিন অব্যবহৃত ছিল। যাতায়াতের সুবিধার জন্য রাস্তাটি আগামী ৩–৪ দিনের মধ্যে সারিয়ে ফেলা হবে। ফলে সেখান দিয়ে আপেল বহনকারী সহ ভারী যানবাহন চলাচল শুরু হবে।
ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘পুনরুদ্ধারের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। কুলু থেকে আপেল আনার বিবিএমবি রাস্তা মেরামত করা হচ্ছে। এই রাস্তা গত কয়েক বছর ধরে অব্যবহৃত ছিল। এখন জাতীয় সড়কের অন্য অংশে কাজ করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে আগামী ৩-৪ দিনের মধ্যে কুলুতে আপেল বহনকারী এবং অন্যান্য যানবাহন চলাচল শুরু করতে পারবে।’
গত কয়েকদিন ধরে অবিরাম বৃষ্টির ফলে ভূমিধস, হড়পা বানে রাজ্যে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করেছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিনের অবিরাম বৃষ্টিতে সারা রাজ্যে মোট ১১৩ স্থানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এই অবস্থায় হিমাচল প্রদেশ সরকার পুরো রাজ্যকে ‘প্রাকৃতিক বিপর্যয় আক্রান্ত এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। রাজ্য সরকারের দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, ২৪ জুন থেকে হিমাচলের মোট আর্থিক ক্ষতি ৮০১৪.৬১ কোটি টাকার। মোট ২০২২টি বাড়ি সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৯৬১৬টি বাড়ি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরকারী বুলেটিনে বলা হয়েছে, বর্ষার প্রকোপে মোট ২২৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং রাজ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় ১১৭ জন মারা গিয়েছেন। ধসের জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে একাধিক হাইওয়ে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বহু ঘরবাড়ি। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা যোশীমঠ এলাকায়। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে সেখানে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। শিব মন্দিরের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৭টি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি দেহ উদ্ধারের জন্য সেখানে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।