অসমের নওগাঁও জেলায় ১৮টি হাতির মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বন দফতরের তরফে এই কথাই জানানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বাজ পড়ে হাতিগুলির মৃত্যু হয়েছে মনে করা হলেও ময়না তদন্তের রিপোর্টের পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সামনে আসবে। এখনই নিশ্চিতভাবে কিছুই বলতে পারছেন না বন দফতরের আধিকারিকরা। ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর।
বন দফতরের মুখ্য সংরক্ষক অমিত সহায় জানিয়েছেন, ‘অসমের কাথিয়াটোলি অভয়ারণ্যের কুণ্ডলি পার্বত্য এলাকায় বুধবার রাতে এই ঘটনাটি ঘটে। এলাকা প্রত্যন্ত হওয়ায় আমাদের দল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে যায়। গিয়ে দেখা যায়, হাতিগুলি মরে পড়ে রয়েছে। পাহাড়ের উপরে ১৪টি হাতির দেহ পাওয়া যায়। পাহাড়ের নিচে আরও ৪টি দেহ পাওয়া গিয়েছে।’
তিনি জানান, শুক্রবার হাতিগুলির মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। হস্তি বিশেষজ্ঞ বিজয়ানন্দ চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘তাঁর মতে, হাতিগুলির বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। এর পিছনে অন্য কোনও কারণ থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে বিষক্রিয়ার ফলে হাতিগুলির মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।’
এর আগে এই রাজ্যেও একাধিক হাতি মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে। অনেকক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু হয়েছে। তবে অসমে যেভাবে একসঙ্গে ১৮টি হাতির মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে, তা সাম্প্রতিককালে ঘটেনি বলেই মনে করা হচ্ছে। গুয়াহাটির বাসিন্দা বিপ্লব তালুকদার নামে এক হস্তি বিশেষজ্ঞ জানান, ‘অসমে এত সংখ্যায় হাতির মৃত্যু খুব একটা বেশি শোনা যায় না। খাদ্যে বিষক্রিয়ায় মৃত্যুর বিষয়টিকেও পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এর আগে, হাতিদের বিষক্রিয়ায় মৃত্যু অসমে ঘটেছে। তবে তা এত বেশি সংখ্যায় আগে কখনও হয়নি। পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পরই মৃত্যুর সঠিক কারণ উঠে আসবে।’
উল্লেখ্য ২০১৭ সালে সেনসাস অনুযায়ী, কর্নাটকের পর অসমেই সবচেয়ে বেশি হাতির বাস। কর্নাটকে যেখানে ৬,০৭৯টি হাতি রয়েছে, সেখানে অসমে রয়েছে ৫,৭১৯ টি। প্রতি বছরই বাজ পড়ে নয়তো বিষক্রিয়ায় প্রচুর হাতির মৃত্যু হয়। ২০১৯ সালে ৮০ টির কাছাকাছি হাতির মৃত্যু হয়েছে।