খলিস্তানি সমর্থকদের দিয়ে ভারতে নাশকতা ঘটানোর পাকিস্তানি ছকে শামিল হওয়ার অভিযোগে কানাডার দুই নাগরিকের বিমানে সফরের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জাস্টিন ট্রুডো সরকার।
তাঁদের বিরুদ্ধে বিমানে ওঠার উপরে নিষেধাজ্ঞার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন কানাডার নাগরিক ভগৎ সিং ব্রার এবং তাঁর ব্যবসায়িক অংশীদার পারভকর সিং দুলাই। আর তার জেরেই জানা গিয়েছে বিস্ফোরক তথ্য।
কানাডিয়ান সংবাদমাধ্য গ্লোবাল নিউজ-এর প্রতিবেদক স্টুয়ার্ট বেল জানিয়েছেন, ‘ব্রারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসমূলক প্রচার, বিশেষ করে খলিস্তান গড়ার লক্ষ্যে নবীনদের মগজধোলাই এবং ভারতে সন্ত্রাসমূলক আক্রমণ সংগঠিত করার উদ্দেশে অস্ত্র সংগ্রহের অভিযোগে তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করেছে কানাডার গোয়েন্দা সংস্থাগুলি।’
অন্য দিকে, ব্রারের সঙ্গী দুলাইয়ের বিরুদ্ধে নাশকতামূলক কাজে ইন্ধন জোগানো এবং খলিস্তানি সন্ত্রাসবাদী সমাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের অভিযোগ উঠেছে বলে জানিয়েছেন স্টুয়ার্ট। খলিস্তানের সমর্থনে প্রকাশ্যে মতামত পেশ করার বিষয়ে দুলাইয়ের নাম একাধিক বার জড়িয়েছে।
সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী আক্রমণের ছক সাজাতে ২০১৫ সালে জনৈক গুরজিৎ সিং চীমার সঙ্গে পাকিস্তান সফরে গিয়েছিলেন ব্রার। গোয়েন্দা সংস্থার হাতে থাকা নথি বলছে, গুরুদ্বারা তৈরির জন্য সংগৃহীত চাঁদার বড় অংশ সন্ত্রাস সংগঠনের পিছনে ব্যয় করেছেন ব্রার। তাঁর সঙ্গে পাক চর সংস্থা আইএসআই-এর যোগ রয়েছে বলেও গোয়েন্দাদের অভিযোগ।
এর পর ২০১৮ সালে ফের পাক সফরে যান ব্রার। সে সময় তাঁর বাবা লখবীর সিং রোডের সঙ্গে দখা করতে গিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। লখবীর সিং আদতে আন্তর্জাতিক শিখ যুব ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা জার্নেইল সিং ভিন্দ্রানওয়ালের ভাইপো।
তবে এখনও পর্যন্ত কোনও আদালতে এই সমস্ত অভিযোগের সপক্ষে কোনও প্রমাণ-সাক্ষ্য জমা পড়েনি। নিজেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ব্রার ও দুলাই।
অটোয়ার ম্যাকডোনাল্ড-ল্যরিয়ার ইনস্টিটিউট-এর সদস্য শুভলয় মজুমদার জানিয়েছেন, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে স্পষ্ট হয়েছে কী ভাবে পাকিস্তান ভারতের বিভিন্ন গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের মধ্যে নাক গলাচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘এটা দুটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য, এবং যে কোনও সরকারের সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে দেখা উচিত।’
এই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি অটোয়ায় ভারতীয় দূতাবাসের কর্তারা। নয়াদিল্লির ভারতীয় আধিকারিকদের দাবি, দীর্ঘ দিন ধরে কানাডায় বসে পাক মদতে ভারতে খলিস্তানবাদী সন্ত্রাস হামলার ছক সাজানো হচ্ছে বলে তাঁদের যে তত্ত্ব রয়েচে, এই ঘটনা তার হাতে-গরম দৃষ্টান্ত।