মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ওড়িশায় হাতির হানায় প্রাণ গেল দুই বোনের। অস্থায়ী ঘরে ঘুমিয়ে থাকার সময় হামলা চালায় হাতির দল। এরপরেই ঘর ভেঙে দুই বোনকে পদপিষ্ট করে হাতি। তাতে সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যু হয় দুই বোনের। নিহতদের নাম ১২ বছর বয়সি সামিয়া মুন্ডা এবং ৩ বছরের চাঁদনি মুন্ডা। এই ঘটনায় পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বনাই বন বিভাগের তমদা রেঞ্জের কান্তপল্লী গ্রামে। এছাড়াও, একইরাতে আরও যুবকের মৃত্যু হয়েছে হাতির হানায়।
আরও পড়ুন: একসঙ্গে তিনজন মহিলার মৃত্যু হল হাতির হানায়, জলদাপাড়ায় ছিন্নভিন্ন দেহ দেখে আলোড়ন
জানা গিয়েছে, শনিবার রাত ১১.৩০ টার দিকে একটি হাতির দল ওই গ্রামে হামলা চালায়। তখন ডালপালা, মাটি এবং পলিথিন দিয়ে তৈরি অস্থায়ী বাড়ি ভেঙে দেয়। ঘটনার সময় একজন মহিলা, তার তিন সন্তান এবং বৃদ্ধ শ্বশুর বাড়িতে ছিলেন। সকলেই ঘুমিয়ে ছিলেন। মহিলা কোনওভাবে তার ৭ বছর বয়সি এক শিশুকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। কিন্তু, দুই বোন ঘুমিয়ে থাকায় পালাতে পারেনি। তারফলে মর্মান্তিক পরিণতি ঘটে।
গুরুন্দিয়ার পঞ্চায়েত সদস্য জানান, পরিবারটি অত্যন্ত অসহায় অবস্থার মধ্যে দিন কাটাত। তাদের অস্থায়ী বাড়ি হাতির হামলা থেকে সুরক্ষা দিতে পারেনি। খবর পেয়ে রবিবার গুরুন্দিয়া থানার পুলিশ তাদের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
একজন বন আধিকারিক জানান, কৈদা বন রেঞ্জের রৌরকেলা বন বিভাগের জঙ্গলের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় হাতির দল গুরুন্দিয়ায় প্রবেশ করে তাণ্ডব চালায়। পরে তারা জঙ্গলের মধ্যে ঢুকে যায়। সেই সময় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। অন্য ঘটনায় শনিবার রাতে একই রেঞ্জের তুকুরা গ্রামে রাজেশ মুন্ডা নামে এক যুবক বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় একটি হাতি তাকে পদপিষ্ট করে মেরে ফেলে। আঞ্চলিক প্রধান বন সংরক্ষক পি রামাস্বামী দুই শিশুর মৃত্যুকে সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি জানান, এই ঘটনার পর তামরা রেঞ্জ এবং বিএফডির ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় হাতি ট্র্যাকিং এবং আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা হবে। হাতির গতিবিধির ওপর নজরদারির জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করার প্রচেষ্টাও চলছে।
বন আধিকারিক জানান, আরও একটি ঘটনায় এক চুক্তিভিত্তিক বনকর্মী আহত হয়েছেন। ওই বনকর্মী ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানোর জন্য বনের ভিতরে গিয়েছিলেন। সেই সময় হাতি হামলা চালায়। ঘটনায় তিনি আহত হন। বন আধিকারিক জানান, এই ঘটনার পর সকলকে নিরাপত্তা প্রোটোকলগুলি কঠোরভাবে অনুসরণ করতে এবং বনে প্রবেশের আগে ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে হাতির উপস্থিতি সম্পর্কে তথ্য পেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় চলতি বছরে ওই এলাকায় হাতির হানায় হতাহতের সংখ্যা বেড়ে হল ১১ জন।