দু'ঘণ্টার ব্যবধানে কোটায় আত্মঘাতী হলেন দু’জন পড়ুয়া। এই অবস্থায় চলতি বছরের প্রথম ২২ দিনে কোটায় পড়ুয়াদের আত্মহত্যার সংখ্যা বেড়ে হল ৬ জন। বুধবার যে দুজন আত্মঘাতী হয়েছেন তাদের মধ্যে একজন হলেন ২৪ বছর বয়সি নিট পরীক্ষার্থী আশফা শেখ এবং অন্যজন অসমের ১৭ বছর বয়সি জেইই পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে প্রথম জনের দেহ উদ্ধার হয় পিজি রুম থেকে এবং দ্বিতীয় জনের দেহ উদ্ধার হয় হস্টেল থেকে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ বেড়েছে অভিভাবকদের মধ্যে। শোকের ছায়া নেমেছে পরিবারে।
আরও পড়ুন: ‘প্রেমে পড়ে’ আত্মহত্যা করছেন কোটায় পড়তে আসা পড়ুয়ারা, দাবি শিক্ষামন্ত্রীর!
জানা গিয়েছে, আশফা শেখ গুজরাটের আমেদাবাদের বাসিন্দা। তিনি নিটের জন্য একাধিকবার প্রস্তুতি নিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি কোটার জহরনগর থানা এলাকায় পেয়িং গেস্ট রুমে ভাড়া ছিলেন। সকাল ১০টার দিকে ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। এর ঠিক ২ ঘণ্টা পরেই অসমের গুয়াহাটির বাসিন্দা ১৭ বছর বয়সি ওই কিশোরের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই কিশোর একই থানার মহাবীর নগরে হস্টেলের ঘরে আত্মহত্যা করে বলে জানা গিয়েছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে দুটি ক্ষেত্রেই কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। ফলে কী কারণে তারা চরম পদক্ষেপ নিয়েছেন? সে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তাদের পরিবারের সদস্যদের এবং রুমমেটদের পাশপাশি সহপাঠীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
জহরনগর থানার সার্কেল ইন্সপেক্টর রাম লক্ষ্মণ বলেছেন, যে আশফা একজন প্রাক্তন কোচিং ছাত্র ছিলেন। তিনি আগে একাধিকবার নিট-এর চেষ্টা করেছিলেন৷ তিনি বর্তমানে নিজেই পড়াশোনা করছিলেন এবং প্রয়োজনীয় বিষয়ে টিউশন নিচ্ছিলেন।
ওদিকে, গুয়াহাটির কিশোরের আগামী সপ্তাহেই জেইই-মেন পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষার আগে এবং চলাকালীন তার দেখভালের জন্য তার মা কোটায় যাচ্ছিলেন। কিন্তু, সেখানে পৌঁছানোর কয়েক ঘণ্টা আগেই ছেলে কঠোর পদক্ষেপ নেয়। কোটায় টানা আত্মহত্যার ঘটনা অভিভাবকদের মধ্যে ভয়ের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই সন্তানদের কোটায় পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। আবার ইতিমধ্যেই যে সমস্ত পড়ুয়ারা কোটায় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাদের অভিভাবকদের মধ্যেও উদ্বেগ বেড়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরে প্রথম আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে গত ৭ জানুয়ারি। ওইদিন নীরজ নামে এক পড়ুয়া আত্মঘাতী হয়েছিলেন। তিনি ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির জেইই এন্ট্রান্স পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এরপর আরও বেশ কয়েকটি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে।