রাতে রান্নার গ্যাসে ছোলা সিদ্ধ বসিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। আর সেই ছোলা জ্বলতে শুরু করলে ধোঁয়ায় ভরে যায় পুরো ঘর। তার জেরে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল ২ যুবকের। এমনই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের নয়ডার সেক্টর ৭০-এ। মৃতদের নাম কাপেন্দ্র (২২) এবং শিবম (২৩)। তাঁরা ফেজ ৩ থানার অধীনে সেক্টর ৭০-এর মামুরার বাসিন্দা। তারা ওই বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ঘর থেকে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: জয়পুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে শেষ হয়ে গেল গোটা পরিবার, তিন শিশু সহ মৃত ৫
সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার ভোরে। তাঁরা গাড়িতে করে ছোলা কুলচে বিক্রি করে বেড়াতেন। পুলিশ তদন্তে জানতে পারে, রাতে ঘুমানোর আগে তাঁরা রান্নার গ্যাসে ছোলা সিদ্ধ করতে দিয়েছিলেন। তবে সময় বাড়তেই পাত্রে থাকা ছোলা পুড়ে যায় এবং তা থেকে বিষাক্ত ধোঁয়া নির্গত হয়। এদিকে, শীতের রাতে ঘরের জানলা দরজা সব বন্ধ থাকায় পুরো ঘর ভরে যায় ধোঁয়া এবং কার্বন মনোক্সাইডে। তারপরেও দম বন্ধ হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও মৃত্যুর সঠিক কারণ সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত নয়। পুলিশ আসল কারণ জানার জন্য দেহ ময়নাতদন্ত করতে পাঠিয়েছে। তারপরেই মৃত্যুর বিষয়টি সঠিকভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব হবে। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের দেহে বাইরে থেকে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। তাই প্রাথমিক কারণ হিসেবে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘরের দরজা, জানালা বন্ধ থাকায় বায়ু চলাচল কার্যত বন্ধ হওয়ায় পুরো ঘর কার্বন মনোক্সাইডে ভর্তি হয়ে গিয়েছিল। আর তাই এমন মর্মান্তিক ঘটনা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের উদ্ধার করে ৩০ নম্বর সেক্টরের জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাদের মৃত ঘোষণা করে। তারা দুজনে মূলত সম্বলের বাসিন্দা। তারা ১০ বাই ১০ ফুটের ওই ঘরে ভাড়া থাকতেন।
একজন সিনিয়র পুলিশ অফিসার বলেছেন, ‘এটা ধারণা করা হচ্ছে যে যুবকরা মৃত্যুর রাতে রান্নার গ্যাসে ছোলা সিদ্ধ করার জন্য রেখেছিল এবং গ্যাস বন্ধ না করেই ঘুমিয়ে পড়েছিল। পাত্রে ছোলাগুলি জ্বলতে শুরু করে, যার ফলে ঘর ভর্তি হয়ে যায় ধোঁয়া এবং কার্বন মনোক্সাইডে।’ অফিসার আরও জানান, প্রতিবেশীরা ধোঁয়া লক্ষ্য করেন এবং দু'জন সকাল সাড়ে ৭ টা পর্যন্ত ঘুম থেকে না ওঠায় তাদের ডাকাডাকি করেন। কোনও সাড়া শব্দ না পাওয়ায় ঘরের দরজা ভেঙে দরজা তাদের মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।মৃতদেহগুলিকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে অন্য কোনও আঘাত বা চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পুলিশ নিহতের পরিবারকে খবর দিয়েছে এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।