হিমাংশু ব্যাস
আমারই বাচ্চা ও়'- পিপিই পরা লোকদের ভিঁড়ের মধ্যে ডুকরে কেঁদে উঠল আবদুল। মারা গিয়েছে তার কুড়ি দিনের শিশু, করোনায়। রয়েছে সংক্রমণ ছড়ানোর ভয়। তাই যত দ্রুত সম্ভব কবর খুঁড়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে চাইছে স্বাস্থ্যকর্মীরা। ভারী মেডিক্যাল কভারে মোড়া শিশুটির শরীর দেখে যেন মনে হচ্ছে কাগজের দলা।
আচমকা সুহান…বলে কেঁদে উঠল শীর্ণকায় আব্দুল। তার প্রথম সন্তানের মৃতদেহ দেখতে হবে এটা হয়তো স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি সে। একবার শুধু পিপিই-টি খুলে নিজের ছেলের প্যাকেট মোড়া দেহটি দেখল আবদুল। তার চোখ ভেজা, মিশে যাচ্ছে পিপিই-র ঘাম ও চোখের জল। এরকমই হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সাক্ষী থাকল জয়পুর। ভারতে এত কম বয়সে করোনার কারণে মারা যাওয়ার কোনও খবর মেলেনি, এর আগে, বলে জানিয়েছে জেকে লোন চিল্ড্রেন হাসপাতালের সুপার অশোক গুপ্তা, যেখানে সুহান ভর্তি ছিল।
অশোকবাবু জানান যে সুহানের পরিবারের কোনও ব্যক্তির করোনা হয়নি, তাই অন্য কোনও ব্যক্তির থেকে এই ভাইরাস শিশুটির শরীরে এসেছিল। চাঁদপোলের নিবাসী আব্দুলরা, যেখানে অনেক করোনার কেস আছে। তাই তার কোভিড পরীক্ষাও হয়। ফলাফল আসার আগেই যদিও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে শিশুটি। পরে জানা যায় যে তার করোনাপজিটিভ ছিল।
এইটা লিখুন, যাতে সবাই সচেতন হয়, কোনও নবজাতককে হয়তো করোনা থেকে বাঁচানো যাবে এর দ্বারা। চোখে জল নিয়েও আব্দুল এই কথা বলল কবরস্থানে উপস্থিত সাংবাদিকদের। এরপর কার্যত ঘোরের মধ্যেই জলের খোঁজে চলে গেল আব্দুল। পুত্রশোকের অভিঘাত, তার ওপর ভারি পিপিই- আব্দুলের পা টলে যাচ্ছিল বারবার।