গত বছরের অগস্টে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়েছে। এই অবস্থায় বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (বিএনপি)। সেই দলে এবার সামনে এল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। দুপক্ষের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা। বুধবার দুপুরে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশ কর্মকর্তা ও নিরাপত্তাকর্মীসহ অন্তত ২২ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি এতটাই উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে যে শেষ পর্যন্ত সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন।
আরও পড়ুন: নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে অগস্টের মধ্যে, অন্তর্বর্তী সরকারের উপর চাপ বাড়াল BNP
বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, শ্যামনগরের ইসমাইলপুর এলাকায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা বাড়ার পর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। শ্যামনগরে নতুন ও পুরনো কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে স্থানীয় বিএনপি নেতৃত্ব। জানা গিয়েছে, শ্যামনগর বিএনপি নতুন কমিটির একটি গোষ্ঠী সমাবেশের আয়োজন করে। এরপরই পুরনো কমিটির প্রাক্তন সদস্যের সঙ্গে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আরও হিংসার আশঙ্কায় উপজেলা প্রশাসন এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে।
জানা যায়, এদিন উপজেলা বিএনপির প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান কবিরের নেতৃত্বে পালটা একটি মিছিল শ্যামনগর শহরের দিকে যাচ্ছিল। সেই সময় মিছিল সমাবেশের কাছে আসতেই দুপক্ষ হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। লাঠি সোটা নিয়ে একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রনি খাতুন এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল রিফাত পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীদের সহায়তায় হস্তক্ষেপের চেষ্টা করলেও হিংসা অব্যাহত থাকে। এই সংঘর্ষে ২২ জন আহত হয়। রিপোর্ট অনুযায়ী, আহতদের মধ্যে রয়েছেন শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি হুমায়ুন কবির, নিরাপত্তা কর্মী, সাইফুল ইসলাম এবং বেশ কয়েকজন বিএনপি কর্মী।
সোলায়মান কবির দাবি করেন, এর আগে ১৯ এবং ২০ জানুয়ারি তাঁর সমর্থকদের উপর হামলা হয়েছিল। যার ফলে তাদের প্রতিবাদ মিছিল হয়েছিল। তিনি আওয়ামী লীগের কর্মীদের সঙ্গে পুরনো কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে তাঁর সমর্থকদের উপর হামলা করার অভিযোগ তোলেন। তিনি দাবি করেন, একাধিক সমর্থক আহত হয়েছেন। কবির জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল আলিমকে হিংসায় উসকানি দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেন।
এদিকে, আগের কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশিক-ই-এলাহী মুন্না অভিযোগ করেছেন যে সোলায়মান ও তাঁর সমর্থকরা বিএনপির ছাত্রদল (ছাত্র শাখা) আয়োজিত ৩১ দফা বৈঠকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। মুন্না দাবি করেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইফতেখার আলির নির্দেশে সোলায়মান ও তাঁর সমর্থকরা আওয়ামী লিগ সমর্থকদের সহায়তায় তাঁর বাড়িতে হামলা চালায়।