গত ১৫ বছরে মহারাষ্ট্রে বাঘের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে রাজ্যে যেভাবে বাঘের মৃত্যু হচ্ছে তাতে উদ্বিগ্ন বনবিভাগ থেকে শুরু করে পশুরপ্রেমীরা। নতুন বছরে মাত্র ২২ দিনে ১১টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত বাঘের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যায়নি। ফলে ক্রমেই উদ্বেগ বেড়ে চলেছে। অন্যদিকে, মহারাষ্ট্রের পাশাপাশি দেশের অন্যান্য রাজ্যেও বাঘের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। গোটা দেশে এখনও পর্যন্ত বাঘের মৃত্যুর সংখ্যা হল ২১ টি। তবে বাঘের মৃত্যু কী কারণে হচ্ছে সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও অজানা। এরমধ্যে টাইগার ক্যাপিটাল হিসেবে পরিচিত তাডোবায় বাঘের মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
আরও পড়ুন: নতুন বছর শুরুর ১০৩ দিনেই মারা গিয়েছে ৪৭টি বাঘ, রিপোর্টে চাঞ্চল্য
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই বাঘের মৃত্যুর কারণ জানার জন্য একটি অনুসন্ধান অভিযান শুরু করা হয়েছে। তবে ওয়ার্ধা জেলার গিরাদ এলাকায় শুধুমাত্র একটি বাঘের মৃত্যু হয়েছে গাড়ি ধাক্কায়। অন্য ক্ষেত্রে বাঘের মৃত্যুতে চোরাচালানকারীদের হাত থাকার কোনও প্রমাণ মেলেনি। অন্য ক্ষেত্রে মনে করা হচ্ছে বা বাঘগুলির মৃত্যু হয়েছে স্বাভাবিক কারণে বা রোগের কারণে। ইতিমধ্যেই বন বিভাগের আধিকারিকরা বিভিন্ন বাঘের মৃত্যুর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অন্যদিকে দুর্ঘটনায় বাঘের মৃত্যুর ক্ষেত্রে একটি মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ঘাতক গাড়িটিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বন্যপ্রাণী কর্মীরা এই ধরনের বাঘের মৃত্যুর রুখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে প্রথম বাঘের মৃতদেহ পাওয়া যায় ২ জানুয়ারি ব্রহ্মপুরী বন বিভাগে। দ্বিতীয় মৃতদেহ পাওয়া যায় ৬ জানুয়ারি তুমসার বন এলাকায়। সেক্ষেত্রে বাঘের ছিন্ন ভিন্ন দেহ উদ্ধার হয়। এরপরের দিন ৭ জানুয়ারি উকনি কয়লা খনি এলাকায় একটি বাঘের আংশিক পচাগলা দেহ পাওয়া যায়। পরে ৮ ও ৯ জানুয়ারি দেওলাপাড় বনাঞ্চলে এক বাঘের শাবকের মৃতদেহ এবং তাডোবা বাফার এলাকায় অন্য এক শাবকের মৃতদেহ পাওয়া যায়। ১৪ জানুয়ারি গোন্দিয়া বনাঞ্চলে বাঘের মৃতদেহ পাওয়া যায়। ১৫ জানুয়ারি দেওলাপার বনাঞ্চলের নভেগাঁওয়ে একটি শাবকের পচা গলা দেহ পাওয়া যায়।
১৯ জানুয়ারি বল্লারশাহ-গোন্দিয়া লাইনে ট্রেনের ধাক্কায় বাঘের মৃত্যু হয়। ২০ জানুয়ারি তাডোবার শিবানী বনাঞ্চলে আরও এক শাবকের মৃতদেহ পাওয়া যায়। আর ২২ জানুয়ারি দুটি বাঘের মৃতদেহ পাওয়া যায়। মন্ত্রী চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে আশ্বস্ত করেছেন যে বাঘের মৃত্যুর তদন্ত করা হবে। বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা বাঘের মৃত্যুর জন্য বন বিভাগকে দায়ী করেছেন। তারা আরও করিডোর গড়ে তোলার দাবি জানাচ্ছেন এবং বর্তমানে থাকা করিডোরগুলিকে রক্ষা করার দাবি জমাচ্ছেন।