খোলামেলা পোশাকে ক্লিভেজ দেখা যাচ্ছিল। তা নিয়েই আপত্তি তোলা হল ফ্রান্সের রাজধানীর অন্যতম জনপ্রিয় মিউজিয়ামে। মুখে কিছু না বললেও স্পষ্ট বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছিল, কী কারণে মিউজিয়ামে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। অচেনা অভিজ্ঞতা ও অস্বস্তির মুখোমুখি হয়ে ক্লিভেজ ঢেকেই ছবি প্রদর্শনীতে ঢুকতে বাধ্য হলেন বছর বাইশের জিন হুয়েতকে।
সেই দলা পাকানো অস্বস্তি মনের ভিতর জমতে দেননি সাহিত্যের পড়ুয়া। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ক্ষোভ উগরে দেন। একটি চিঠিতে জানান, গত ৮ সেপ্টেম্বর এক বন্ধু মারিয়ন ক্যানিভালের সঙ্গে একটু অন্যরকম সময় কাটাতে চেয়েছিলেন জিন। সেইমতো একটি ক্যাফেতে মধ্যাহ্নভোজ সারেন। তারপর বিকেল চারটে নাগাদ মুসে ডোর্সে আর্ট মিউজিয়ামে যান। কারণ সেখানে জেমস তিশোর ছবির প্রদর্শনী চলছিল। কিন্তু টিকিট কাটতে গিয়েই জিনের সেই স্বপ্নের দিন তালগোল পাকিয়ে যায়।
জিন জানান, মিউজিয়ামের এক এজেন্ট বলেন তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। প্রথমে ভ্যাবাচাকা খেয়ে যান। কিন্তু পরে বুঝতে পারেন, তাঁর পোশাক নিয়ে যত আপত্তি। কী কারণে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না, তা অবশ্য বলেননি ওই এজেন্ট। জোরাজুরির পর ওই এজেন্ট চলে যান এবং একজন নিরাপত্তারক্ষী এবং মিউজিয়ামের ম্যানেজারকে নিয়ে আসেন। কোন নিয়ম ভঙ্গ করার জন্য তাঁদের আটকানো হচ্ছে, তা জানতে চান জিন। কিন্তু যথারীতি কোনও কারণ দর্শানো হয়নি। জিন সরাসরি প্রশ্ন করেন, ‘আমার স্তনই কি সমস্যার কারণ?
প্যারিস নিবাসী তরুণী জানান, কেউ সোজাসুজি কিছু বলেছিলেন না। বারবার এক কথা বলা হচ্ছিল, জ্যাকেট পরে পুরো চেন টেনে ভিতরে যান। বাধ্য হয়ে জ্যাকেট পরেই মিউজিয়ামে ঢোকেন জিন। কিন্তু ততক্ষণে ছবি থেকে মনোযোগ সরে গিয়েছে তাঁর। মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাদানুবাদের সময় রীতিমতো ‘বিব্রত’ ও ‘লজ্জিত’ বোধ করেছিলেন। জিনের কথায়, ‘ওটা অদ্ভুত মুহূর্ত ছিল যখন সবাই আমার স্তনের দিকে তাকিয়েছিলেন। কিন্তু কেউ কিছু বলছিলেন না।’ তবে জিন স্পষ্টতই বলেছেন, ‘আমায় নিয়ে লোকে কী ফ্যান্টাসি করল, তার দায় আমার নয়।’
পরে জিনের সেই পোস্টটি টুইটারে ভাইরাল হয়ে যায়। চাপে পড়ে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হয় মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ। টুইটারে বলা হয়, ‘আমরা অত্যন্ত অনুশোচনা বোধ করছি এবং ক্ষমা চাইছি। তাঁর সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করছি।’ পরে জিনের সঙ্গে যোগাযোগও করা হয়। তারপরও অবশ্য প্রশ্ন থামছে না।
সবথেকে বড় ঘটনা হল, যে শিল্পীর ছবি প্রদর্শনীতে গিয়েছিলেন, সেই তিশো মহিলাদের দৈনন্দিন জীবনের ছবি আঁকার জন্য বেশি পরিচিত। আর সেই প্রদর্শনীতে গিয়ে এরকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলেন জিন। সত্যিই, বিচিত্র এই দুনিয়া!