'ডাংকি' রুটে আমেরিকায় পৌঁছতে গিয়ে বিদেশ বিভুঁইয়ে ভয়ঙ্কর বিপদে পড়লেন ২৩০ জন ভারতীয়! আমেরিকায় পৌঁছানো তো অনেক দূর, বদলে অসহায় অবস্থায় তাঁদের আটকে পড়তে হল সংযুক্ত আরব আমিরশাহির শারজায়।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ২৩০ জনের ওই দলের মধ্য়ে ১৭০ জনই গুজরাতি। সেই দলে অসংখ্য পরিবার রয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও পুরুষের পাশাপাশি রয়েছেন বৃদ্ধ বৃদ্ধারা। রয়েছে বহু শিশু ও নাবালকও।
ঘটনা প্রসঙ্গে এখনও পর্যন্ত যেটুকু তথ্য সামনে এসেছে, তা হল - ভারতীয়দের ওই দলটি আসলে কোনও দালালচক্রের খপ্পড়ে পড়েই বেআইনিভাবে আমেরিকা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়!
ওই দলের সদস্যদের বোঝানো হয়, তাঁদের প্রথমে দুবাই নিয়ে যাওয়া হবে। তারপর সেখান থেকে তাঁদের পাঠানো হবে ব্রাজিল। এই সফরের জন্য একটি চাটার্ড বিমান ভাড়া করা হয়েছে বলেও ওই ভারতীয়দের জানানো হয়েছিল।
কিন্তু, ব্রাজিল কেন? সূত্রের দাবি, ওই ভারতীয়দের দালালরা বুঝিয়েছিল, এখন এটাই নাকি 'নতুন ডাংকি রুট'! লোকজন এই রুট দিয়েই নাকি এখন লুকিয়ে আমেরিকায় ঢোকে!
দালালরা ওই ভারতীয়দের আরও বলেছিল, ব্রাজিল থেকে তাঁদের সড়ক পথে মেক্সিকো হয়ে আমেরিকা ঢোকানো হবে।
সবথেকে ভয়ঙ্কর বিষয় হল, ওই ভারতীয় দলের সদস্যরা জানতেন, তাঁরা যেটা করতে চলেছেন, সেটা বেআইনি। তারপরও তাঁরা এভাবে আমেরিকায় ঢুকতে রাজি হয়ে যান!
সংশ্লিষ্ট সূত্রকে উদ্ধৃত করে টাইমস অফ ইন্ডিয়া-র প্রতিবেদনে এই প্রসঙ্গে লেখা হয়েছে, 'এই মুহূর্তে শারজার একটি হোটেলে ওই ভারতীয়রা রয়েছেন। তাঁদের মধ্য়ে দিল্লি ও পঞ্জাবের ৬০ জন বাসিন্দা রয়েছেন।...'
'...ঘটনায় ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। তাতে জানা গিয়েছে, এর নেপথ্যে একাধিক দালাল রয়েছে। তাদের মধ্যে যে কয়েকজনের নাম সামনে এসেছে, তারা হল - সমীর, ধবল এবং দুবাইয়ের বাসিন্দা হসমুখ। এছাড়াও এই চক্রে যুক্ত রয়েছে - পাজি এবং ঠাকুর সাহেব নামে দুই ব্যক্তি। দুবাইয়ের আরও এক বাসিন্দা - তার নাম আরকে, সেও এই গোটা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।'
আরও একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, 'কাদি, কালোল এবং আমেদাবাদের দালালরা প্রাথমিকভাবে এই বেআইনি সফর শুরু করিয়েছিল। তারাই ওই ভারতীয়দের প্রাথমিকভাবে বিমানে তুলে দেয়। বেআইনিভাবে আমেরিকায় পাঠানোর জন্য ওই দালালরা ৩ কোটি টাকা নিয়েছিল!...'
'...তাদের দাবি ছিল, ওই টাকা খরচ করেই নাকি চাটার্ড বিমান ভাড়া করা হবে। প্রথমে ঠিক করা হয়েছিল, ১১ ডিসেম্বর ওই ভারতীয়দের দুবাই থেকে রওনা করানো হবে। কিন্তু, পরে ঠিক করা হয়, তাঁরা ২০ ডিসেম্বর ব্রাজিলের উদ্দেশে রওনা দেবেন। কারণ, ইতিমধ্যেই আমেরিকা-মেক্সিকো সীমান্তে নিরাপত্তা কড়াকড়ি করা হয়েছে।'
সংশ্লিষ্ট সূত্র মারফত আরও জানা গিয়েছে, ওই দালালরা সংশ্লিষ্ট ভারতীয় দলের সদস্যদের বিস্তারিতবাবে জানায়নি যে তাদের ঠিক কোন পথে ধরে আমেরিকায় ঢোকানো হবে।
কিন্তু, ওই ভারতীয়দের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের একবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসার আগেই তাঁদের প্রত্যেককে সেদেশে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে।