তথ্য চুরি, ডার্ক ওয়েবে বিক্রির কথা অনেকেই শুনেছেন। কিন্তু ঠিক কীভাবে এই ডেটা বিক্রি হয়, তা জানতেন? কত টাকায় বিক্রি হয়? সেই ধারণাই দিল ডেটা প্রাইভেসি এবং সাইবার সিকিউরিটি গবেষণা সংস্থা 'প্রাইভেসি অ্যাফেয়ার্স'। সংস্থা সম্প্রতি 'ডার্ক ওয়েব প্রাইস ইনডেক্স ২০২১' প্রকাশ করেছে। তাতেই মিলেছে আভাস।
কী বিক্রি হয়?
কোনও ব্যক্তির যে কোনও তথ্যই তার অজান্তে চুরি হয়ে বিক্রি হতে পারে। ঠিক কী কী বিক্রি হয়? তালিকায় রয়েছে ক্রেডিট কার্ড ডিটেলস, ডিজিটাল পেমেন্ট অ্যাকাউন্ট, ক্রিপ্টোকারেন্সি ওয়ালেট, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট, স্ট্রিমিং সার্ভিস, পাসওয়ার্ড এবং ম্যালওয়ার।
এর মধ্যে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়েরই চাহিদা বেশি। তার মধ্যে পড়ছে ক্রেডিট কার্ড ডিটেলস, ডিজিটাল পেমেন্ট অ্যাকাউন্ট, ক্রিপ্টোকারেন্সি ওয়ালেট ইত্যাদি।
কত দাম হতে পারে ক্রেডিট কার্ড ডিটেলসের?
পর্যবেক্ষকদের মতে, প্রায় ২৫ মার্কিন ডলারে বিক্রি হয় এক একটি ক্রেডিট কার্ডের ক্লোন। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ১,৮৮৩ টাকা। সাধারণত একসঙ্গে কয়েক হাজার ক্লোনড কার্ড কিনে নেয় প্রতারকরা।
পিনসহ একটি মাস্টার কার্ড বা ভিসা কার্ডের এরকম দাম হয়। এদিকে আমেরিকান এক্সপ্রেসের একটি কার্ডের দাম ৩৫ মার্কিন ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
অন্যদিকে অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স বেশি হলে সেই কার্ডের দামও বাড়ে। কোনও অ্যাকাউন্টে ১,০০০ ডলারের বেশি ব্যালেন্স থাকলে সেই কার্ডের দাম ১৫০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত হতে পারে। তেমনই ৫,০০০ ডলার ব্যালেন্স থাকলে দাম চড়তে পারে ২৪০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত।
শিকার বড় বড় সংস্থা, সংগঠন
সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ জ্যাকারি নফো জানিয়েছেন, '২০২০ সালেই নাসা, ম্যাকডোনাল্ডস, মাইক্রোসফট, টি মোবাইল, ফায়ার আই, সোলারউন্ডসের মতো বৃহত্ সংস্থা বড়সড় সাইবার হানার শিকার হয়েছে।'
বাদ নেই সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্টও
একটা হ্যাক হওয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট কত টাকায় বিক্রি হতে পারে জানেন? প্রায় ৬৫ মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৪,৮৭৭ টাকা। অন্যদিকে হ্যাক করা ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট বিক্রি হতে পারে ৪৫ মার্কিন ডলারে। টুইটার অ্যাকাউন্টের দর ৩৫ মার্কিন ডলার। ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট হলে তো কথাই নেই।
Gmail-এর সঙ্গে সম্পর্কিত কোনও তথ্যাদি বা পেমেন্ট মেথড বিক্রি হতে পারে ৮০ মার্কিন ডলার করে।
চুরি যায় নেটফ্লিক্স অ্যাকাউন্টও
বেশি দামি নেটফ্লিক্স সাবস্ক্রিপশন থাকা অ্যাকাউন্টও হ্যাক করে হ্যাকাররা। সেই অ্যাকাউন্ট বিক্রি হয়ে যায় ৪৪ মার্কিন ডলারে। অ্যাডোব ক্রিয়েটিভ ক্লাউড বিক্রি হতে পারে ১৬০ মার্কিন ডলারে।
ঠিক কীভাবে সাবধানে থাকা যায়?
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন এখনও নকল লটারি, অনলাইন ক্যাসিনো পপআপ, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো পেজ, নকল সফটওয়্যারের ওয়েবসাইট, পর্ন সাইট ইত্যাদিই হাতিয়ার স্ক্যামারদের। এগুলির মাধ্যমেই ব্যবহারকারীদের ডিভাইসে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করানো হয়।