দুটি টেকটোনিক প্লেটের মাঝামাঝি অবস্থানের কারণে তাইওয়ানে প্রায়ই ভূমিকম্প হয়ে থাকে। মঙ্গলবার সোমবার রাতে মাঝারি ভূমিকম্প অনুভূত হল তাইওয়ানের দক্ষিণাঞ্চলে। এরফলে বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৭ জন। যদিও মৃত্যুর কোনও খবর পাওয়া যায়নি। তাইওয়ানের সেন্ট্রাল মেটিওরোলজিক্যাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানিয়েছে, এদিন রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬।
আরও পড়ুন: মৃত্যুমিছিল তিব্বতে! ভূমিকম্পে মৃত বেড়ে ১২৬, শোকবার্তায় চিনের নাম আনল না ভারত
এদিন ভূমিকম্প অনুভূত হয় রাজধানী তাইপেই সহ বেশকিছু জায়গায়। ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে ইউজিং জেলায়। মধ্যরাতে পরপরই আঘাত হানে ভূমিকম্প । মার্কিন জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, ভূমিকম্প ১ মিনিট ধরে স্থায়ী ছিল। ঘটনায় আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরমধ্যে বেশ কয়েকজন রয়েছে শিশু। ফেসবুকে শেয়ার করা ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, যে স্থানীয় দমকল একটি শিশুসহ তিনজনকে উদ্ধার করছে। আহতরা নানক্সি জেলায় একটি ভেঙে পড়া বাড়িতে আটকে ছিলেন। এই জেলায় আরও কয়েকটি বাড়ির ছাদ ভেঙে পড়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রক বলেছে, মোট ২৭ জন আহত হয়েছেন। যখন নানক্সি জেলার ফায়ার ব্রিগেড বলেছে, কোনও বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তাইওয়ানের চিপ প্রস্তুতকারক জায়ান্ট টিএসএমসি বলেছে, ভূমিকম্পের পরে তারা নিজেদের কারখানাগুলি থেকে শ্রমিকদের নিরাপদে সরিয়ে আনে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ইউজিং-এর উত্তরে চিয়াই শহরে একটি বাড়িতে সবকিছু ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রশান্ত মহাসাগরে দুটি টেকটোনিক প্লেটের মাঝামাঝি অবস্থিত তাইওয়ান। মার্কিন জিওলজিক্যাল সার্ভে জানাচ্ছে, এটি বিশ্বের সবচেয়ে ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলগুলির একটি। এর আগে একাধিক বড় ভূমিকম্প হয়েছে তাইওয়ানে। গত বছরের এপ্রিলে ৭.৪-মাত্রার ভূমিকম্পে তাইওয়ানে মৃত্যু হয়েছিল ১৭ জনের। এর ফলে ভিন্ন জায়গায় ভূমিধস এবং বহু বাড়িঘর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল।
তবে তাই তাইওয়ানের ইতিহাসের সবচেয়ে মারাত্মক ভূমিকম্পগুলির মধ্যে একটি ছিল ১৯৯৯ সালের ভূমিকম্প। ৭.৬ মাত্রার সেই ভূমিকম্পে ২৪০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এরপরেই তাইওয়ান ভূমিকম্প প্রতিরোধী নির্মাণ পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বিল্ডিং কোড আপডেট এবং উন্নত করেছে। বাড়ি যাতে ভূমিকম্পে ভাঙতে না পারে তারজন্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হয়। এর পাশাপাশি, তাইওয়ান একটি উন্নত প্রাথমিক সতর্কতা ব্যবস্থা তৈরি করেছে যা জনসাধারণকে সেকেন্ডের মধ্যে সম্ভাব্য গুরুতর ভূমিকম্প সম্পর্কে সতর্ক করতে পারে।