সব মিলিয়ে যে মাওবাদীদের মাথার দাম ছিল ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা, তাদেরই গুলিতে ঝাঁঝরা করে নিকেশ করল নিরাপত্তাবাহিনী! বিজাপুরের এনকাউন্টার প্রসঙ্গে শুক্রবার এমনই দাবি করেছে ছত্তিশগড় পুলিশ।
এদিন পুলিশের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, বিজাপুরের এনকাউন্টারে যে ৩১ জন মাওবাদীকে খতম করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ২৮ জনকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। আর এই ২৮ জন মাওবাদীরই মাথার দাম ছিল ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা! আর, এই ২৮ জন নিহত মাওবাদীর মধ্যে ১৭ জন পুরুষ এবং বাকি ১১ জন মহিলা।
গত ৬ জানুয়ারি একটি ভয়াবহ আইইডি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনায় নিরাপত্তাবাহিনীর আটজন সদস্য শহিদ হন এবং একজন সাধারণ নাগরিককেও প্রাণ হারাতে হয়। সেই প্রাণঘাতী হামলার যে মাস্টারমাইন্ড ছিল, সেই মাওবাদীকেও বিজাপুরের এনকাউন্টারে খতম করা হয়।
রাজ্যের বাস্তার রেঞ্জের পুলিশের আইজি (ইন্সপেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ) সুন্দররাজ পি জানিয়েছেন, যে ৩১ জন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে অন্যতম - হুঙ্গা কার্মা। সে ছিল মাওবাদীদের পশ্চিম বাস্তার ডিভিশনের সম্পাদক। সরকারের পক্ষ থেকে তার মাথায় দাম ঘোষণা করা হয়েছিল ৮ লক্ষ টাকা।
এই প্রসঙ্গে আইজি বলেন, 'গত ৬ জানুয়ারি নিরাপত্তাবাহিনীর উপর যে প্রাণঘাতী হামলা চালানো হয়েছিল, সেই ঘটনার মূলচক্রী ছিল এই ব্যক্তি। এছাড়াও, ২০০৬ সালে মুরকিনার ক্যাম্পে যে আক্রমণ করা হয়েছিল, তারও নেপথ্যে ছিল এই হুঙ্গা কার্মা। ১৯ বছর আগের সেই ঘটনায় শহিদ হয়েছিলন ১১ জন পুলিশকর্মী। এর পরের বছর - ২০০৭ সালে রানিবোদলি ক্যাম্পে হামলা চালানো হয়। সেই ঘটনায় নিহত হন নিরাপত্তাবাহিনীর ৫৫ জন সদস্য।'
হুঙ্গা কার্মা শঙ্কু নামেও পরিচিত ছিল। মাওবাদীদের বিভাগীয় কমিটির সদস্য ছিল সে। ১৯৯৬ সালে বেআইনি এই সংগঠনের সঙ্গে তার সম্পর্ক তৈরি হয়। তার বিরুদ্ধে মাওবাদী হামলা সংক্রান্ত মোট আটটি ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। বিজাপুর জেলার একাধিক থানায় হামলা চালানোর ঘটনাগুলিও তার মধ্যে রয়েছে। এছাড়াও, পুলিশের শিবিরে হামলা, অপহরণ, খুনের মতো নানা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল সে।
আইজি আরও জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে যে মাওবাদীদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে, তাদের দেহ পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বাকি তিনজনকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
চলতি বছরে সবেমাত্র দেড়মাসের মতো সময় অতিবাহিত হয়েছে। আর এরই মধ্যেই ছত্তিশগড়ে একাধিক অভিযান চালিয়ে নিরাপত্তাবাহিনী মোট ৮১ জন মাওবাদীকে নিকেশ করেছে। তাদের মধ্য়ে ৬৫ জনকে খতম করা হয়েছে শুধুমাত্র বাস্তার ডিভিশনেই। যা বিজাপুর এবং অন্য ছ'টি জেলা নিয়ে গঠিত।
বাস্তারে একের পর এক মাওদমন অভিযান চালিয়ে এবছর এখনও পর্যন্ত ৭৭টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। যার মধ্য়ে রয়েছে - দু'টি একে-৪৭ রাইফেল, পাঁচটি এসএলআর, দু'টি ইনসাস রাইফেল, এবং তিনটি .৩০৩ রাইফেল।