গত ২ জুন শুক্রবার সন্ধ্যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস। ওই সন্ধ্যায় যেন মৃত্যুপুরী হয়ে উঠেছিল ওড়িশার বালেশ্বর। রক্তে ভেসেছিল বাহানাগা স্টেশনের আশপাশের এলাকা। সেই বিভীষিকাময় স্মৃতি এখনও ভুলতে পারেনি দেশবাসি। স্বজন হারানোর কান্না এখনও থামেনি। কিন্তু, ৪ মাস পরে এখনও শনাক্ত না হয় অবশেষে দাহ করা হল ২৮টি দাবিহীন দেহ।
আরও পড়ুন: বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনার ৩ মাস পরেও শনাক্ত হয়নি ২৮টি দেহ, সংরক্ষিত আছে এইমসে
বুধবার ভুবনেশ্বর পুরসভার তরফে (বিএমসি) দেহগুলির দাহ সম্পন্ন করা হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মৃতদেহগুলির দাহ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। তা শেষ হয়েছে বুধবার সকাল ৮টার দিকে। বিএমসির মেয়র সুলচনা দাস জানান, দেহগুলির অন্ত্যেষ্ঠীক্রিয়ার জন্য মহিলা স্বেচ্ছাসেবকরা এগিয়ে এসেছিলেন। তাদের কাছে মৃতদেহগুলি কোন ধর্মের বা কোন জাতের সেগুলি কোনও বড় বিষয় ছিল না।
চার মাস ধরে এইএমস হাসপাতালে মৃতদেহগুলি সংরক্ষণ রাখা হয়েছিল। সমস্ত মৃতদেহ ভরতপুর শ্মশানে দাহ করা হয়েছে। ভুবনেশ্বরের এইমস কর্তৃপক্ষ সিবিআই-এর আধিকারিকদের উপস্থিতিতে মৃতদেহগুলি পুরসভার হাতে তুলে দেয়। পুরসভার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সব দাবিহীন মৃতদেহ রাজ্য সরকার, কেন্দ্রীয় সরকার এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশিকা অনুসারে দাহ করা হয়েছে। শেষকৃত্যে মৃতদেহ হস্তান্তরের পুরো প্রক্রিয়াটি ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, তদন্তের জন্য বা আইনি সমস্যা হলে সেক্ষেত্রে মৃতদেহের ডিএনএ সংরক্ষণ করা হয়েছে। যদিও চার মাসে ২৮টি দাহ দাবি করতে কেউ আসেনি। ফলে পরে যে কেউ দাবি করতে পারে। তাই, আইনি বিষয়গুলি মাথায় রেখে ডিএনএ সংরক্ষণ করা হয়েছে বলে ভুবনেশ্বরের এইমসের অ্যানাটমি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক প্রভাস ত্রিপাঠি।
দুর্ঘটনা পরেই ভুবনেশ্বরের এইমস হাসপাতাল দুটি ধাপে ১৬২ টি মৃতদেহ পেয়েছে। তার মধ্যে ১৩৪ টি দেহের ডিএনএ পরীক্ষা করার পর প্রকৃত দাবিদারদের হাতে সেগুলি তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ২৮টি দেহ দাবিহীন থেকে যায়। ভুবনেশ্বরের এইমস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২৮ টি মৃতদেহ ১০ অক্টোবর দাহের জন্য পুরসভাকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
দুর্ঘটনার তদন্তকারী সিবিআই সম্প্রতি মৃতদেহগুলির দাহ করার জন্য খুরদা প্রশাসনকে অনুরোধ করেছিল। তারপরে একটি পুরসভাকে পাঠানো হয়েছিল। এর জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি মেনে চলার জন্য এইমস এবং পুরসভাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।