কট্টর ইসলামপন্থী জঙ্গি সংগঠন 'ইসলামিক স্টেট' (আইএস বা আইসিস)-কে সহযোগিতা করার অভিযোগে আমেরিকা নিবাসী ২৮ বছরের এক তরুণকে গ্রেফতার করল মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে, ধৃতের নাম আনাস সইদ। সে হাউস্টোনের বাসিন্দা। সংশ্লিষ্ট আদালতে পেশ করা নথিপত্র অনুসারে, আইএস-এর সমর্থনে অনলাইন প্রচার চালাতে সাহায্য করত আনাস। এর জন্য অনলাইন প্রোপাগান্ডা বা কনটেন্ট তৈরি করত সে।
এমনকী, আইএস জঙ্গিদের সাহায্য করতে ইন্টারনেটে বোমা তৈরি নিয়েও রীতিমতো গবেষণা করেছে ওই যুবক। বিস্ফোরক তৈরির বিভিন্ন প্রযুক্তি, যার মধ্যে অন্যতম হল - বিস্ফোরকযুক্ত বেল্ট বা কোমরবন্ধ তৈরি - সে আয়ত্ত করেছিল।
আনাসের বিরুদ্ধে আদালতে যে নথি জমা করেছে ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, আনাস নাকি গোয়েন্দাদের জানিয়েছে, আইএস-এর হয়ে গ্রাফিক জিজাইন করাটা তার প্যাসন!
৪০৪মিডিয়া-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৭ সাল থেকে আনাসের উপর নজর রেখেছে এফবিআই। কারণ, সেই বছরই প্রথম সে আইএস-পন্থী একাধিক স্টিকার অনলাইনে অর্ডার করে।
সূত্রের দাবি, এরপর ২০১৮ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত - অন্তত পাঁচবার তাকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এফবিআই। যদিও প্রতিবারই সে নাকি গোয়েন্দাদের কাছে দাবি করে, সে আইএস-এর সংস্পর্শে নেই।
এমনকী, সেই সময় সে এমনও দাবি করে যে, 'শুধুমাত্র স্কুলের পড়াশোনা করার জন্য এবং খেলা দেখার জন্যই সে ইন্টারনেট ব্যবহার করে।' আদালতে পেশ করা নথিতে অন্তত এমনটাই দাবি করা হয়েছে।
যদিও ২০২৩ সালে গোয়েন্দাদের হাতে আনাস সম্পর্কে অন্য তথ্য আসে। তাঁরা জানতে পারেন, আইএস-এর সঙ্গে ওই যুবকের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। এক্ষেত্রে তার একটি বিশেষ ফেসবুক অ্যাকাউন্টেরও হদিশ পান গোয়েন্দারা।
বস্তুত, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে মেটা-র তরফ থেকে এফবিআই-এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তারা সংশ্লিষ্ট ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে মার্কিন গোয়েন্দাদের সতর্ক করে। জানা যায়, ওই অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেই নিয়মিত আইএস-এর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে আনাস।
এরপরই আনাস সইদের নামে সার্চ ওয়ারেন্ট ইস্যু করায় এফবিআই। তার ভিত্তিতে ওই যুবকের বিভিন্ন গ্যাজেট বাজেয়াপ্ত করা হয়। সেসবের তল্লাশি করে এফবিআই-এ এমন কিছু 'এনক্রিপটেড মেসেজ'-এর সন্ধান পায়, যা থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়, আনাস সইদ আইএস-এর প্রচারে লাগাতার কাজ করে চলেছে।
গোয়েন্দাদের দাবি, আনাস সইদ তার গ্রাফিক ডিজাইনের বিদ্যা কাজে লাগিয়েই আইএস-এর জন্য নানা ধরনের ছবি, ভিডিয়ো প্রভৃতি তৈরি করত। তার সেই কাজের মূল্যায়ন করত এমন এক ব্যক্তি, যে নাকি আইএস-এর '২ নম্বর' ডিজাইনার!
এমনকী, নিজের অজান্তে আনাস এক আন্ডার কভার এফবিআই এজেন্টের সঙ্গেও কথা বলে। তাঁকে সে জানায়, কীভাবে মধ্যপ্রাচ্যে যেতে হবে এবং আইএস-এ যোগ দিতে হবে।
সূত্রের দাবি, আনাস নিজেও মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার কথা ভাবছিল। যাতে আইএস-এর সমর্থনে হাউস্টন এলাকায় সে কোনও নাশকতা ঘটাতে পারে!