একটি ফ্ল্যাট আর তার মধ্য়ে সব মিলিয়ে তিন শতাধিক বিড়াল। চারদিকে একেবারে গিজগিজ করছে বিড়াল আর বিড়াল। প্রতিবেশীরা তিতিবিরক্ত হয়ে গিয়েছিলেন এই বিড়ালের জ্বালায়। তাঁরা জানিয়েছিলেন প্রচন্ড দুর্গন্ধ বের হয়। সেই সঙ্গে বিড়ালের ডাক রাতদিন। এদিকে সেই অভিযোগ পাওয়ার পাওয়ার পরেই তৎপর হয়েছিল মহারাষ্ট্রের পশুপালন বিভাগ।
মালিক ৩০০টি বিড়াল রাখছেন এই অভিযোগ পেয়ে মহারাষ্ট্রের পশুপালন বিভাগ এবং স্থানীয় পুলিশ পুনের এই ফ্ল্যাটে গিয়েছিল।
হাদাপসারের মার্ভেল বাউন্টি হাউজিং সোসাইটির বাসিন্দা ফ্ল্যাটের মালিককে বিড়ালগুলিকে যথাযথ জায়গায় স্থানান্তরিত করার জন্য নোটিশ জারি করা হয়েছে। স্থানীয়দের আপত্তির জেরেই এই নোটিশ জারি করা হয়েছে বলে খবর।
গত সপ্তাহে হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পুরসভার আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ওই ফ্ল্যাটের বাসিন্দা রিঙ্কু ভরদ্বাজ ও তাঁর বোনকে (ঋতু ভরদ্বাজ) নোটিস পাঠানো হয়েছে।
হাদাপসার থানার এক আধিকারিকের কথা উল্লেখ করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, বিড়ালের সংখ্যা বেশি থাকায় বাসিন্দারা স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অভিযোগগুলির মধ্যে অবিরাম দুর্গন্ধ এবং প্রাণীদের অত্যধিক শব্দের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত ছিল।
হাদাপসরের মার্ভেল বাউন্টি হাউজিং সোসাইটির বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন যে একজন ফ্ল্যাট মালিক তার ফ্ল্যাটে ৩০০ টিরও বেশি বিড়াল রাখছেন, যার ফলে স্বাস্থ্যবিধির সমস্যা দেখা দিয়েছে।
ওই আধিকারিক বলেন, বিড়ালদের থেকে ক্রমাগত দুর্গন্ধ ও অতিরিক্ত শব্দের খবর পাওয়া গেছে।
পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে জেলা ভেটেরিনারি অফিসার ও পুলিশের নেতৃত্বে পশুপালন বিভাগের একটি দল ৩.৫ বিএইচকে ফ্ল্যাটের ভিতরে অন্যরকম একটি পরিস্থিতি দেখতে পান। ‘আমরা ফ্ল্যাটের ভিতরে ৩০০ বিড়াল পেয়েছি। সেখানে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছিল,’ যোগ করেন ওই কর্মকর্তা।
'মার্ভেল বাউন্টি সোসাইটির একটি অ্যাপার্টমেন্টের মালিক প্রায়শই বিপথগামী বিড়ালদের বাড়িতে নিয়ে আসতেন এবং বিড়ালগুলি সুস্থ হয়ে উঠলে তাদের ছেড়ে দিতেন ... এই কারণে, অ্যাপার্টমেন্টে প্রচুর বিড়াল জমে গিয়েছিল, যা অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতি তৈরি করেছিল, যা প্রতিবেশীদের বিরক্ত করেছিল। প্রতিবেশীরা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনে ফোন করেন এবং তার আধিকারিকরা অ্যাপার্টমেন্টে পৌঁছে ফ্ল্যাটগুলি গোটা বিষয়টি সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন এবং মালিককে নোটিশ দেন যে দু'দিনের মধ্যে সমস্ত বিড়ালকে ছেড়ে দিতে হবে।
আধিকারিক জানিয়েছেন, এখনও কোনও মামলা দায়ের করা হয়নি, এবং আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের সাথে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পরামর্শ করব। পুরসভার দখলে গিয়ে বিড়ালগুলিকে উদ্ধার করা হবে। ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, এবং কর্তৃপক্ষ বিড়ালগুলিকে স্থানান্তরিত করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
পুনের সোসাইটি ফর দ্য প্রিভেনশন অফ ক্রুয়েলটি টু অ্যানিম্যালস (এসপিসিএ) গত সপ্তাহে ফ্ল্যাটটি পরিদর্শন করে বলেছে যে ফ্ল্যাটটি অস্বাস্থ্যকর ছিল এবং তীব্র এবং অবিরাম অ্যামোনিয়ার মতো গন্ধ নির্গত হয়েছিল।
আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ওই ফ্ল্যাটে টাটকা ও শুকনো মল পাওয়া গিয়েছে এবং ৩০০-র বেশি বিড়ালের জন্য মাত্র চার থেকে পাঁচটি লিটার ট্রে পাওয়া গিয়েছে। কোনও বিড়ালের জন্য কোনও টিকা বা মেডিকেল রেকর্ড উপলব্ধ না করে পশুচিকিত্সা যত্নের অভাব পাওয়া গেছে। তত্ত্বাবধায়করা নিজেরাই টিকা নেননি এবং বিড়ালের সঠিক সংখ্যা সম্পর্কে অসচেতন বলে স্বীকার করেছেন, যা সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং যত্নের অভাবকে নির্দেশ করে। একাধিক গর্ভবতী বিড়ালের উপস্থিতিতে অনিয়ন্ত্রিত প্রজননের স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে এবং নির্বীজকরণ বা জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কোনও রেকর্ড নেই, কর্মকর্তারা হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেছেন।