শ্রুতি তোমার ও যোগেন্দ্র লাম্বা
মাত্র ৫ হাজার টাকার জন্য এক আদিবাসী ব্যক্তিকে পুড়িয়ে খুন করা হল মধ্যপ্রদেশের গুনা জেলায়। লকডাউনের সময় ৫ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের গুনা জেলার উকাওয়ার খুর্দ গ্রামের বাসিন্দা বিজয় সাহারিয়া। আর তা ফেরত না দেওয়ায় তাঁকে পুড়িয়ে খুন করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই গ্রামেরই বাসিন্দা রাধেশ্যাম লোধাকে।
ভোপাল থেকে ২১৪ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত এই গুনা জেলার পুলিশ সুপার রাজেশকুমার সিং জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে গ্রেফতারির পর ধৃতের বিরুদ্ধে এসসি এসটি আইনের পাশাপাশি ৩০২ (খুন) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, লকডাউনে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন কৃষি শ্রমিক বিজয় সাহারিয়া। মে মাসে কৃষক রাধেশ্যাম লোধার কাছ থেকে সুদে ৫ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন তিনি। রাধেশ্যামের জমিতেই কাজ করতেন বিজয়। কিন্তু তার পারিশ্রমিক চাইতে গেলে রাধেশ্যাম সেই টাকা দেয়নি বলে অভিযোগ। সে বিজয়ের কাছ থেকে তার পাওনা টাকা দাবি করে। পারিশ্রমিক থেকে ৫ হাজার টাকা কেটে নিয়ে বাকি টাকা তাঁকে দিতে বলেন বিজয়। কিন্তু সেই কথা রাধেশ্যাম কানেই তোলেনি বলে অভিযোগ।
পুলিশ সুপার বলছিলেন, ‘শুক্রবার রাতে এই নিয়ে ফের তাঁদের মধ্যে বাদানুবাদ হয়। বচসা শুরু হলে বিজয়কে মারধর করতে শুরু করে রাধেশ্যাম। এর পরই রাধেশ্যাম ঘর থেকে কেরোসিন নিয়ে এসে তা বিজয়ের ওপর ঢেলে দেয়। আর এর পরেই বিজয়ের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় রাধেশ্যাম। বিজয়ের আর্তচিৎকার শুনে গ্রামবাসীরে ছুটে এসে আগুনে নেভানোর চেষ্টা করেন। তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে জেলা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় বিজয়ের।’
হাসপাতালে পুলিশকে দেওয়া বয়ানে রাধেশ্যাম লোধের ওপর অভিযোগ আনেন বিজয় সাহারিয়া। গুনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার টিএস বাঘেল বলেন, ‘রাধেশ্যামকে গ্রেফতার করা হলে সে তার অপরাধের কথা স্বীকার করেছে।’ মৃতের শেষকৃত্য সম্পন্ন করার জন্য তাঁর পরিবারকে ২০ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য করেছেন জেলাশাসক কুমার পুরুষোত্তম। তিনি জানান, এসসি এসটি আইন অনুযায়ী মৃতের পরিবার সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাবে।