বাংলাদেশের তেঁতুলিয়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করার সময় চার হিন্দুকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রথম আলোর রিপোর্ট অনুযায়ী, দেবনগড় ইউনিয়নের সুকানী সীমান্তের ৭৪০ নম্বর মেইন পিলারের ৩ নম্বর সাব–পিলার এলাকা থেকে একই পরিবারের ৩ সদস্য সহ মোট ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতরা সকলেই বাংলাদেশি নাগরিক বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের নাম - মণিরাম বর্মণ (৫২), তাঁর স্ত্রী হীরা রানি বর্মণ (৩৫), মণিরামে প্রথম স্ত্রীর ছেলে (প্রথম স্ত্রীর) রিপন বর্মণ (২১) এবং প্রতিবেশী নিমাই চন্দ্র বর্মণ। ধৃতরা ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ধোন্দগাঁও এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। (আরও পড়ুন: সত্যি আলাদা হবে চট্টগ্রাম? আতঙ্কে ভারতের ইকোনমিক জোন বাতিলের দাবি বাংলাদেশে)
আরও পড়ুন: হেনস্থার শিকার হয়েও দমছেন না চিন্ময় প্রভুর আইনজীবী, এদিকে করলেন পুলিশের প্রশংসা
রিপোর্ট অনুযায়ী, ঠাকুরগাওঁয়ের এক দালালচক্রের সাহায্যে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিলেন এই চার বাংলাদেশি। সেই সময় বিএসএফ সদস্যরা তাঁদের দেখে ফেলে এবং বিজিবিকে অবগত করে। তখন বিজিবি তাঁদের গ্রেফতার করে। ধৃতদের জেরা করে নারি জানা গিয়েছে, সীমান্ত পার করাতে দালালকে ১ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন ৪ জন। এদিকে ধৃতদের কাছ থেকে বাংলাদেশি ১৪ হাজার ৭০০ টাকা, ভারতের ৪০৫ টাকা, এক ভরি সোনার গয়না, ৭ ভরি রুপোর গয়না পাওয়া গিয়েছে। এদিকে এই চারজনের সঙ্গে এক নাবালিকাও ছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে। তবে তাঁকে গ্রেফতার না করে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এদিকে ভারতের সংবাদমাধ্যমের একাধিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশের পঞ্চগড়ের এক নাবালিকা এপারে চলে এসেছেন এবং তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। (আরও পড়ুন: বাংলাদেশের আইন উপদেষ্টাই 'র এজেন্ট'? মুখ খুললেন ইউনুসের সরকারে থাকা ছাত্র নেতা)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের কব্জি কাটার হুমকি ত্বহা সিদ্দিকির গলায়, পাকিস্তান নিয়ে পীরজাদা বললেন…
রিপোর্ট অনুযায়ী, আতঙ্কে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে চলে আসেন ১৭ বছর বয়সি এক নাবালিকা। তবে এপারে এসে বিএসএফের হাতে ধরা পড়েছেন সেই তরুণী। পরে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে সেই তরুণীকে তুলে দেয় বিএসএফ। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরে। ধরা পড়ার পরে সেই তরুণী দাবি করেছেন, তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে বিগত বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই মৌলবাদীরা প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে যাচ্ছিল। তবে সম্প্রতি তাঁকে অপহরণ করার হুমকি দেওয়া হয়। এরপরই বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আসার পরিকল্পনা করে সেই নাবালিকা। তবে আইনি পথে ভিসা নিয়ে ভারতে আসতে কতদিন লাগতে পারে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। তাই পায়ে হেঁটে সীমান্ত পার করেন তিনি। আর তখনই বিএসএফের হাতে ধরা পড়েন সেই তরুণী। (আরও পড়ুন: '১৫ মিনিট...', 'কলকাতা দখলের' পালটা বাংলাদেশ দখলের হুমকি TMC-র মুসলিম নেতার!)
পুলিশের কাছে সেই তরুণী দাবি করেন, তাঁর আত্মীয়রা ভারতে থাকেন। তাঁদের কাছেই যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন তিনি। এদিকে সেই তরুণীর মুখের কথা যাচাই করতে চাইছে পুলিশ। এই আবহে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। এদিকে সেই তরুণীকে সীমান্ত পার করতে কোনও দালাল সাহায্য করেছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এই ঘটনা প্রসঙ্গে তদন্তকারী অফিসার বলেন, 'মেয়েটি দাবি করেছে, জলপাইগুড়ি জেলায় তাঁর আত্মীয় আছে। আমরা তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। এছাড়া সেই তরুণীকে সীমান্ত পার করতে কে সাহায্য করেছে, তা জানতে তদন্ত চালানো হচ্ছে।'
সেই নাবালিকা সম্পর্কে পুলিশ আরও জানিয়েছে, ধৃত নাবালিকা বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার বাসিন্দা। পায়ে হেঁটেই সীমান্ত পার করেছিলেন তিনি। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া ব্লকের ফতেহপুর আউটপোস্টের পাশ দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে সেই নাবালিকা। তখন বিএসএফের নজরে পড়েন তিনি। এদিকে বার্তাসংস্থা পিটিআইকে সেই তরুণীর ভারতীয় এক আত্মীয় বলেন, 'সেই নাবালিকা এবং তাঁর পরিবার ইসকনের ভক্ত। বাংলাদেশের মৌলবাদীরা তাঁকে অপহরণ করার হুমকি দিয়েছিল। এছাড়া তাঁর পরিবারকেও খুন করার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এরপরই সেই নাবালিকাকে ভারতে পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিল তাঁর পরিবার। তবে ঠিক কবে তাঁকে পাঠানো হবে, তা আমরা জানতাম না।' জলপাইগুড়িতে থাকা সেই নাবালিকার আত্মীয় আরও জানান, বাংলাদেশে মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভের কাজ করতেন সেই নাবালিকার বাবা। তবে বিগত বহুদিন ধরেই তিনি অসুস্থ।