বিহারের বুদ্ধগয়ায় চার বিদেশি পর্যটকের কোভিড পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ এল। এই চারজনকেই আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে। ২৯ ডিসেম্বর থেকে গয়ায় থাকবেন দলাই লামা। এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই ভারতে এসেছিলেন এই চার পর্যটক। আক্রান্তদের মধ্যে একজন মায়ানমার, একজন থাইল্যান্ড এবং দু'জন ব্রিটেন থেকে এসেছেন। উল্লেখ্য, যে চার দেশ থেকে ভারতে এলে কোভিড পরীক্ষা করানো বাধ্যতামূলক, তাদের মধ্যে থাইল্যান্ডও রয়েছে। গয়া জেলার দায়িত্বে থাকা মেডিকেল অফিসার ডাঃ রঞ্জন সিং এর মতে, কোনও কোভিড আক্রান্তের শারীরিক অবস্থাই গুরুতর নয়। তবে সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, তার জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করছে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকায় কলকাতা বিমানবন্দর থেকে হাসপাতালে আনা হল এক বিদেশিকে। আপাতত তাঁকে বেলেঘাটা আইডিতে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী সেই যাত্রী অস্ট্রেলিয়া থেকে কলকাতায় আসেন। তিনি বুদ্ধগয়াতে যাওয়ার জন্যই ভারতে এসেছেন বলে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, বুদ্ধ গয়ার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রায় ৫০টি দেশ থেকে ৬০ হাজার জন ভারতে আসবেন বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ওমিক্রনের সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিএফ৭ যাতে ভারতে ছড়িয়ে না পড়তে পারে, তার জন্য সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলিতে নজরদারি বেড়েছে। শনিবার থেকেই দিল্লি, মুম্বই, হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, আমেদাবাদ, পুণে, গোয়া, ইন্দোরের বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক উড়ানের যাত্রীদের ব়্যানডাম করোনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এদিকে করোনার চিকিৎসার সবরকম পরিকাঠামো তৈরি রাখতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে। প্রয়োজন পড়লে যাতে মেডিক্যাল অক্সিজেনের ঘাটতি না দেখা দেয়, তা নিশ্চিত করতে বলেছে কেন্দ্র। এরই মধ্যে চিন ফেরত আগ্রার এক ব্যবসায়ীর শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে একদিন আগে। আজ চিন থেকে ভারতে আসা আরও এক ব্যক্তির নমুনার করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসে বেঙ্গালুরুতে। তবে এই দুই ব্যক্তি ওমিক্রনের সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিএফ৭-এ আক্রান্ত কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তাদের নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং হচ্ছে।
উল্লেখ্য, চিনে নতুন করে ছড়িয়েছে করোনা সংক্রমণ। সাম্প্রতিককালে ব্লুমবার্গের এক রিপোর্টে দাবি কার হয়েছিল, গত ২০ ডিসেম্বর, সে দেশে একদিনেই ৩.৭ কোটি মানুষ কোভিড আক্রান্ত হন। জানুয়ারি মাসে সংখ্যাটা ৪ কোটি ছুঁতে পারে। দৈনিক এত কোটি মানুষ কোভিড আক্রান্ত হওয়ায় চিনের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। হিসেব বলছে ডিসেম্বরের প্রথম ২০ দিনেই চিনে ২৪.৮ কোটি মানুষ কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন চিনে। দেশটির জনসংখ্যার ১৮ শতাংশই কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন বিগত এই কয়েকদিনে। এদিকে অন্য বেশ কিছু রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে আগামী কয়েক মাসে চিনে কোভিড অতিমারির তিনটি ঢেউ আছড়ে পড়বে। পাশাপাশি এও দাবি করা হয়েছে যে প্রায় ১০ লাখ মানুষ এই সংক্রমণের ঢেউতে প্রাণ হারাবেন। এই পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত আগাম সতর্কতা অবলম্বন করছে।