বছরের শুরুতেই ফের মাওবাদীদের সঙ্গে পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে চলল তুমুল গুলির লড়াই। রাতভর দু’পক্ষের গুলির লড়াইয়ে নিহত হয়েছে ৪ মাওবাদী। এছাড়াও, এক পুলিশ কর্মী নিহত হয়েছেন। ওই পুলিশ কর্মী জেলা রিজার্ভ গার্ডের (ডিআরজি) জওয়ান। নিরাপত্তা বাহিনী নিহত মাওবাদীদের কাছ থেকে একে ৪৭-এর মতো আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার গভীর রাতে ছত্তিশগড়ের দন্তেওয়াড়া এবং নায়ারণপুর জেলার সীমানায় অবুঝমাড়ের জঙ্গলে। উল্লেখ্য, এই অঞ্চলে এটিই বছরের প্রথম গুলির লড়াই।
আরও পড়ুন: আত্মসমর্পণ কিষেণজির ভাতৃবধূ বিমলার, ১৮ পুলিশকে খুনের অভিযোগ মাওবাদী নেত্রীর নামে
জানা যাচ্ছে, অবুঝমাড় ছত্তিশগড়ের মাওবাদীদের দীর্ঘকাল ধরে শক্ত ঘাঁটি হিসেবে রয়েছে। এমনকী এটি এমন একটি অঞ্চল যেখানে ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে জরিপ করা হয়নি। এলাকাটি গোয়ার থেকে বড় এবং বস্তারের নারায়ণপুর জেলার মাওবাদী প্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত। এটি বিজাপুর, দান্তেওয়াড়া, ছত্তিশগড়ের কাঙ্কের এবং মহারাষ্ট্রের গদচিরোলির একটি ছোট অংশ।
অবুঝমাড়ে মাওবাদীদের নিধন করতে নারায়ণপুর, দান্তেওয়াড়া, জগদলপুর, কোন্ডাগাঁও এবং বিশেষ টাস্ক ফোর্সের ডিআরজির একটি যৌথ দল অভিযান চালায়। বস্তার রেঞ্জের পুলিশ আধিকারিক সুন্দররাজ পি বলেছেন, শনিবার সন্ধ্যায় দুপক্ষের গুলির লড়াই শুরু হয়। প্রায় কয়েকঘণ্টা ধরে দুপক্ষের গুলির লড়াই চলে। লড়াই থেমে যাওয়ার পর অনুসন্ধান অভিযান চালানো হয়। তাতে কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়ার (মাওবাদী) সশস্ত্র শাখা পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মি (পিএলজিএ)-এর পোশাক পরে থাকা ৪ মাওবাদীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া দুপক্ষের গুলির লড়াইয়ে ডিআরজির হেড কনস্টেবল সান্নু করমও মারা যান। ঘটনাস্থল থেকে একটি একে ৪৭ রাইফেল এবং একটি এসএলআর উদ্ধার হয়েছে। বাহিনী জানিয়েছে, এখনও তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে মাওবাদীদের নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। গত বছর ২১৭ জন মাওবাদী নিহত হয়েছে। যার মধ্যে আবুঝহমাদ এবং এর আশেপাশে ১০০ জনেরও বেশি মাওবাদী নিহত হয়েছিল। এছাড়া, ৮০০ জনেরও বেশি মাওবাদীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। প্রায় ৮০২ জন অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করে। এছাড়াও ওই বছর মাওবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রায় ১৮ জন নিরাপত্তা কর্মী প্রাণ হারিয়েছিলেন। আর মাওবাদীদের হাতে নিহত হয়েছিলেন ৬৫ জন সাধারণ নাগরিক।