বাগদেবীর বন্দনায় সুউচ্চ ৪০ ফুটের মূর্তি নির্মাণ করা হল। বসন্ত পঞ্চমী তিথিতে ধুমধাম করে সেই মূর্তির পুজোও করা হল। আনন্দে মাতল আট থেকে আশি!
৪০ ফুটের এই সরস্বতী প্রতিমার পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল ত্রিপুরার আগরতলার বরদোয়ালিতে। যা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ড. মানিক সাহার বিধানসভা নির্বাচনী এলাকা।
সূত্রের দাবি, এবছর সারা রাজ্যে যেখানে যত সরস্বতী পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল, তার মধ্য়ে বরদোয়ালির এই ৪০ ফুটের দেবী প্রতিমাই সবথেকে দীর্ঘ।
আগরতলা পুরনিগমের (এএমসি) পক্ষ থেকে এবারের এই পুজোর আয়োজন করা হয়। যে এলাকায় এই আয়োজন করা হয়, সেটি পুরনিগমের ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত।
পুজো কমিটির চেয়ারম্যান জয়ন্ত চৌধুরী জানিয়েছেন, ২০২১ সাল থেকেই তাঁরা এই বিষয়টি নিয়ে ভাবনা, চিন্তা শুরু করেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল, সরস্বতীর বিরাট মূর্তি নির্মাণ করে তাঁর আরাধনার আয়োজন করা। বিশেষ করে করোনা অতিমারি এবং লকডাউনের সময়ের পর থেকেই এই বিষয়টি নিয়ে পরিকল্পনা শুরু হয়।
সেবছর ২৫ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট একটি সরস্বতী মূর্তি গড়ে দেবীর পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল। এই একই জায়গায় সেই পুজো হয়েছিল। সেখানেই এবার এই ৪০ ফুটের মূর্তির পুজো করা হল।
এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জয়ন্ত চৌধুরী বলেন, 'টানা লকডাউনের সময় মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে নিজেদের ঘরে কার্যত বন্দিদশা কাটাকে বাধ্য হয়েছিল। তারপর তারা তাদের সাধারণ জীবন যাপনে ফিরে আসে। তখন থেকেই আমাদের মনে দেবী সরস্বতীর বিরাট মূর্তি নির্মাণের ভাবনা ছিল।'
তিনি আরও জানান, 'আমরা আমাদের রাজ্যের সর্বত্র খোঁজ নিয়েছি। উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্য়ান্য জায়গা থেকেও খবর নিয়েছি। আমাদের বিশ্বাস, সারা ত্রিপুরায় এবং উত্তর-পূর্ব ভারতেও আমাদের প্রতিমাই সর্বোচ্চ।'
এই সরস্বতী পুজো উপলক্ষে আরও অনেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। যার মধ্য়ে রয়েছে - আট দিন ধরে চলা মেলা এবং বিভিন্ন সান্ধ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এক্ষেত্রে অন্যতম আকর্ষণ হল - পুতুলনাচ। সেইসঙ্গে থাকছে - শিশুদের জন্য যেমন খুশি সাজো প্রতিযোগিতা, মহিলাদের জন্য শঙ্খধ্বনি প্রতিযোগিতা, থিয়েটার, মুখাভিনয় এবং আরও অনেক কিছু।
এবছরের এই অনুষ্ঠানগুলিতে অংশ নিতে ত্রিপুরার নানা প্রান্ত থেকে শিল্পীরা যেমন আসবেন, তেমনই - দুই পড়শি রাজ্য অসম ও পশ্চিমবঙ্গ থেকেও শিল্পীরা ত্রিপুরায় পৌঁছবেন।
এবছরের এই প্রতিমা যিনি গড়েছেন, তিনিও পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। নাম - তারক পাল। এবছর পুজো, মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মিলিত বাজেট ১৫ লক্ষ টাকা।
পুজো কমিটির এক সদস্য জানান, 'বরদোয়ালি হাইস্কুলের মাঠে এই পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। এই নিয়ে চতুর্থ বছর আমরা এই পুজো করছি। ভবিষ্যতেও আমরা এই ধরনের প্রতিমা নির্মাণ করব।'