মানবপাচার চক্রের মাধ্যমে ভারতীয়দের রাশিয়ান সেনায় যুক্ত করার অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ উঠেছিল, তাঁদের লোভনীয় চাকরির কথা বলে রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তারপর কেড়ে নেওয়া হয়েছিল পাসপোর্ট। সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধে নামানোর অভিযোগ উঠেছিল। রাশিয়ান সেনা এখনও পর্যন্ত তেমনই ৪৫ জন ভারতীয়কে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। একথা জানিয়েছেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। নয়াদিল্লি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিল রুশ সেনাবাহিনীতে ভারতীয়দের নিয়োগ করা যাবে না। তাছাড়া, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও এ বিষয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। গত জুলাইয়ে মোদীর রাশিয়ার সফরের পর থেকে ৩৫ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও ৫০ জন আছেন।
আরও পড়ুন: রুশ সেনাবাহিনীতে জোর করে নিয়োগ, ১৫ ভারতীয়কে মুক্তি দিল রাশিয়া, দাবি সাংসদের
বৃহস্পতিবার বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বৈঠকের পর ৩৫ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। জয়সওয়াল বলেন, ‘জুলাই মাসে আমাদের প্রধানমন্ত্রী যখন রাশিয়া সফরে গিয়েছিলেন, তখন তিনি পুতিনের কাছেও বিষয়টি তুলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সফরের পর ৩৫ জন ভারতীয় নাগরিককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর সফরের আগে ১০ জন ভারতীয় নাগরিককে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ৬ জন দুদিন আগে ফিরে এসেছেন। আরও কয়েকজন শীঘ্রই ফিরে আসবেন।’ তবে এখনও ৫০ জন ভারতীয় নাগরিক রয়েছেন, যাঁরা রুশ সেনায় আছেন। তাঁদের ফিরিয়ে আনার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জয়সওয়াল জানিয়েছেন।
চলতি সপ্তাহের শুরুতেই রাজ্যসভার সাংসদ বিক্রমজিৎ সিং সাহনি বলেছিলেন, রুশ সেনাবাহিনীতে যোগদানের জন্য প্রতারিত হওয়া কমপক্ষে ১৫ জন যুবককে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। মুক্ত হওয়ার পর ১৫ জন ভারতীয় যুবকে দেশে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে চারজন পঞ্জাবের বাসিন্দা।
উল্লেখ্য, এর আগে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক একটি বিবৃতিতে জানিয়েছিল, রাশিয়া তাদের সেনাবাহিনীতে ভারতীয়দের নিয়োগ যেন বন্ধ করা হয়। ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, তার সঙ্গে এটি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এর পাশাপাশি ভারতীয় নাগরিকদেরও এব্যাপারে সতর্ক করা হয়।
গত ফেব্রুয়ারিতে বিদেশ মন্ত্রক জানায়, ২০ জন ভারতীয় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। সেই সমস্ত ভারতীয়রা দেশে ফিরে আসতে চেয়েছেন। এরপরেই ঁতাদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সব রকমের চেষ্টা করা হয়। জানা যাচ্ছে, রাশিয়ায় যে সমস্ত ভারতীয়কে সেনাবাহিনীতে ভর্তি করা হয়েছিল তাদের দুবাই ভিত্তিক একটি সংস্থার মাধ্যমে নিয়োগ করা হয়েছিল এবং ইউটিউবের মাধ্যমে তাঁদের প্রলোভন দেখানো হয়েছিল। সেক্ষেত্রে একবার তারা রাশিয়া পৌঁছে গেলে তাদের সেখানে নথিতে স্বাক্ষর করিয়ে এবং যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর আগে ১৫ দিনের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল।