বিরাট এই বিশ্বে কত আজব ঘটনাই না ঘটে! সম্প্রতি তেমনই এক ঘটনা ঘটেছে। ৪৭ বছরের এক মহিলা, যিনি নিজেকে 'জীবন্ত বার্বি পুতুল' (হিউম্যান বার্বি) বলে দাবি করেন, সেই তিনিই অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করেছেন, তিনি তাঁর ২৩ বছরের ছেলের শরীর থেকে রক্ত গ্রহণ করবেন! কারণ, তাতেই নাকি তাঁর যৌবন অক্ষুণ থাকবে!
মহিলার আরও দাবি, তাঁর ছেলে নাকি অত্যন্ত খুশি এই ঘটনায়! এমনকী, তিনি নাকি এখন তাঁর দিদিমার বিউটি ট্রিটমেন্টের জন্যও নিজের রক্ত দান করতে প্রস্তুত!
যে মহিলাকে নিয়ে এত কথা বলা হচ্ছে, তাঁর নাম মার্সেলা ইগলেসিয়া। তিনি আমেরিকার লস অ্যাঞ্জলসের বাসিন্দা। নিউ ইয়র্ক পোস্ট-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্সেলা বলেন, 'আপনার শরীরে তরুণ কোষের জোগান অব্যাহত রাখতে এই ধরনের রক্ত সঞ্চালন (ব্লাড ট্রান্সফিউশন) এক অত্যন্ত কার্যকরী এবং অত্যাধুনিক বিউটি ট্রিটমেন্ট। বিশেষ করে সেই রক্ত যদি আপনার নিজের সন্তানের শরীর থেকে নেওয়া হয়।'
সূত্রের দাবি, মার্সেলা নিজের সৌন্দর্যে এতটাই মুগ্ধ যে তিনি নিজেই নিজেকে 'জীবন্ত বার্বি'র উপাধি দিয়ে বসে আছেন। তাঁর দাবি, নিজের যৌবন ধরে রাখতে ইতিমধ্য়েই 'স্টেম সেল থেরাপি' করিয়েছেন। আর তারপরই তিনি এই নয়া রক্ত দেওয়া-নেওয়ার থেরাপি সম্পর্কে জানতে পারেন।
মার্সেলার আরও দাবি, 'এইভাবে রক্ত সঞ্চালন করা হলে আপনার শরীরে টাটকা লোহিত রক্তকণিকা প্রবেশ করবে। তার মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন আপনার শরীরে ঢুকবে। পাশাপাশি, প্রোটিন সমৃদ্ধ প্লাজমা রক্তপাত বন্ধ করতে এবং শরীরকে সারিয়ে তুলতে সাহায্য করবে'।
যদিও একইসঙ্গে মার্সেলা এটাও স্বীকার করেছেন যে এই ধরনের বিউটি ট্রিটমেন্ট আদৌ কারও চেহারা থেকে বয়সের ছাপ দূর করতে পারে কিনা, সেটা প্রমাণিত সত্য নয়!
এখন ঘটনা হল, এই বিষয়টি মোটেও ভালো নজরে দেখছে না প্রশাসন। ২০১৯ সালেই 'অল্পবয়সী দাতা'দের শরীর থেকে বেশি বয়সী গ্রহিতার শরীরে প্লাজমা ইনফিউশন নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে 'ফুড অ্য়ান্ড ড্রাগ অ্য়াডমিনিস্ট্রেশন' (এফডিএ)। তাদের স্পষ্ট কথা, এর ফলে ভয়ঙ্কর শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সেই সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, 'এর ফলে বয়সবৃদ্ধির লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এবং স্মৃতিভ্রংশ ঘটতে পারে। এমনকী, ডিমেনশিয়া, পারকিনসন্স ডিসিজ, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস, অ্য়ালঝাইমার মতো গুরুতর অসুখেও আক্রান্ত পারেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।'
মার্সেলা অবশ্য এসবে পাত্তা দিতে নারাজ। যৌবন ধরে রাখতে তিনি ইতিমধ্যেই প্রায় ১ লক্ষ মার্কিন ডলার খরচ করে ফেলেছেন, শুধুমাত্র বিভিন্ন ধরনের বিউটি ট্রিটমেন্ট করানোর জন্য! আর এবার তিনি নিজের সন্তান, ২৩ বছরের রডরিগোর শরীর থেকে রক্ত চান!
রোমাঞ্চকর বিষয় হল, পশ্চিমী দুনিয়ার কল্পকাহিনিতে ড্রাকুলা বা ভ্য়াম্পায়ার নামক যে পিশাচের কথা বলা হয়, তারাও নাকি বেঁচে থাকতে এবং চির যৌবন ধরে রাখতে অন্য় মানুষের রক্ত পান করত! এই মহিলা যদিও সরাসরি ছেলের রক্ত পান করবেন না, বিকল্প উপায়ে তা শরীরে গ্রহণ করবেন!