নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন মহম্মদ ইউনুস। বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত নাম তিনি। একদিকে যেমন তাঁর গুণগ্রাহীর সংখ্যার শেষ নেই, তেমনই অন্যদিকে দেশের প্রাক্তন শাসকদের বিরাগভাজনও তিনি। হাসিনার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল বেশ খারাপ। আর সেই খারাপের মাত্রা বাড়ে ৫ কটুক্তি এবং ঘটনায়। দেখে নেওয়া যাক, সেগুলি কী কী।
গ্রামীণ ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠা করে, স্বল্পসঞ্চয় প্রকল্পে দরিদ্র মানুষকে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন মহম্মদ ইউনুস। বহু মানুষ তাতে উপকৃত হন বলেও শোনা যায়। ২০০৬ সালে এই কারণেই নোবেল শান্তি পুরস্কার পান তিনি। কিন্তু হাসিনা সরকার কখনও ইউনুসকে ভালো চোখে দেখেনি। হাসিনা তাঁকে গরিবের রক্ত শোষণকারী বলে আক্রমণ করেন। সেটি তাঁদের সম্পর্ককে তিক্ত করেছিল।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্যেও ইউনুসকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন হাসিনা। ইউনুসের বিরুদ্ধে অপপ্রচার এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেন তিনি। হাসিনার অভিযোগ ছিল, পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্ব ব্যাঙ্ক অর্থ বরাদ্দ করলে, ইউনুসের প্ররোচনায় সেই বরাদ্দ আটকে যায়।
বিষয়টি এখানেই থামেনি। এর পরে হাসিনা বলেন, ‘যে একটি এমডি পদের জন্য পদ্মা সেতুর মতো সেতুর টাকা বন্ধ করেছে, তাকে পদ্মা নদীতে দুইটা চুবানি দিয়ে তোলা উচিত। মরে যাতে না যায়, পদ্মা নদীতে একটু চুবানি দিয়ে সেতুতে তুলে দেওয়া উচিত। তাহলে যদি শিক্ষা হয়। পদ্মা সেতুর অর্থ বন্ধ করাল ইউনুস। কেন? গ্রামীণ ব্যাংকের একটি এমডি পদে তাকে থাকতে হবে।’
সরকারি অনুমোদন ছাড়া বইয়ের রয়্যালটির টাকা-সহ অন্য ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে অর্থ সংগ্রহের অভিযোগও উঠেছিল ইউনুসের বিরুদ্ধে। তুলেছিল হাসিনার সরকার। অপরাধ মামলা দায়ের হয় একাধিক। সেই নিয়ে আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রাক্তন মহাসচিব বান কি মুন-সহ অনেকেই প্রতিবাদ জানান চিঠি লিখে। সংবাদিক বৈঠকে এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমার খুব অবাক লাগছে। অপরাধ করেননি, ভদ্রলোকের যদি এতটাই আত্মবিশ্বাস থাকত, তাহলে তিনি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিবৃতি ভিক্ষা করে বেড়াতেন না।’
ওদিকে এক সাক্ষাৎকারে ইউনুস বলেছিলেন, ‘উনি (শেখ হাসিনা) মনে করেন— আমি দেশের সর্বোচ্চ ডাকু, সন্ত্রাসবাদী কিংবা আমি অপরাধী, সেরা চোর। আমাকে বলেন, আমি সুদখোর, ঘুষখোর। এমন সব কটু শব্দ ব্যবহার করেন যেন মনে হয় আমার সম্পর্কে ধারণা খুবই খারাপ। সম্পর্কে কেন ফাটল সেটা বলতে পারব না। তবে আমি বলতে পারি, আমার তরফ থেকে হয়নি।’