কয়লা খনিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। আর তার জেরেই প্রাণ হারাতে হল অন্তত ৫১ জনকে। আহত হলেন আরও অন্তত ২০ জন। মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটেছে ইরানের দক্ষিণ খোরাসান প্রদেশে অবস্থিত একটি কয়লা খনিতে। রবিবার সেদেশের সরকারি সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশ করা হয়।
প্রাথমিকভাবে বলা হচ্ছে, গ্যাস লিকের কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। সরকারি সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানানো হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কয়লা খনিটি পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে মদনজু নামে একটি সংস্থা। খনির বি ও সি ব্লকে আচমকা মিথেন গ্যাস লিক করতে শুরু করে। তার জেরেই বিস্ফোরণ ঘটে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন দক্ষিণ খোরাসান প্রদেশের গভর্নর আলি আকবর রহিমি। রবিবার সরকারি টিভি চ্যানেলে তাঁর একটি সাক্ষাৎকার সম্প্রচার করা হয়। সেখানে গর্ভনর বলেন, 'সারা দেশে মোট যত পরিমাণ কয়লা সরবরাহ করা হয়, তার প্রায় ৭৬ শতাংশই সংশ্লিষ্ট এলাকা থেকে উত্তোলন করা হয়। ওই অঞ্চলে ৮ থেকে ১০টি বড় সংস্থা কয়লা উত্তোলনের কাজ করে। তার মধ্যে মদনজু অন্যতম।'
এখনও পর্যন্ত যতটুকু খবর পাওয়া গিয়েছে, সেই অনুসারে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বি ব্লকে ইতিমধ্যেই উদ্ধারকাজ শেষ করা হয়েছে। দুর্ঘটনার সময় ওই ব্লকে মোট ৪৭ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৩০ জনেরই মৃত্যু হয়েছে। বাকি ১৭ জন গুরুতর জখম হয়েছেন। স্থানীয় গভর্নর নিজেই সেকথা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, সি ব্লকেও উদ্ধারকাজ শুরু করা হয়েছে। উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার দীর্ঘক্ষণ পরও এই ব্লকে মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি অত্যন্ত বেশি। যার ফলে, উদ্ধারকাজে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। সেই কাজ শেষ করতে বেশ কয়েক ঘণ্টা সময় লাগবে। প্রসঙ্গত, দুর্ঘটনার সময় সি ব্লকে ৬৯ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন।
সরকারি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই আহত ১৭ জন শ্রমিককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে, শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, দুর্ঘটনার সময় কর্মরত ২৪ জন শ্রমিকের কোনও সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, শনিবার রাত ৯টা নাগাদ (স্থানীয় সময় অনুসারে) এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে।
ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও শোক প্রকাশ করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। ঘটনায় নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানানোর সময় প্রেসিডেন্ট বলেন, 'আমি ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা যত দূর সম্ভব যথাযথভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার চেষ্টা করছি।'