এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে তুরস্ক হয়ে সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার পথে মৃত্যু অন্তত ২৪ জন পাকিস্তানির। ঘটনায় মোট ৫৯ জন মারা গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। মোট ১৪০ জন শরণার্থী নিয়ে তুরস্ক থেকে সমুদ্রপথে ইটালির উদ্দেশে যাত্রা করেছিল নৌকাটি। পরে সমুদ্রের তটবর্তী এলাকায় পাথরে ধাক্কা খেয়ে ভেঙে যায় নৌকাটি। এর জেরে মৃত্যু হয়েছে মোট ৫৯ জন। পরে টুইটারে পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ নিশ্চিত করে জানান, মৃতদের মধ্যে ২৪ জন পাকিস্তানি ছিলেন। জানা গিয়েছে, ভেঙে যাওয়া নৌকাটিতে ইরান ও আফগানিস্তানের বাসিন্দারাও ছিলেন। রবিবারের এই দুর্ঘটনায় ৮১ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তাদের মধ্যে ২০ জন হাসপাতালে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। (আরও পড়ুন: প্রেমিকাকে মেসেজ করায় বন্ধুর হৃৎপিণ্ড, যৌনাঙ্গ, আঙুল কেটে নিয়ে সেলফি তুলল যুবক!)
এই আবহে পাক প্রধানমন্ত্রী শরিফ এক বিবৃতিতে বলেন, 'ইতালিতে একটি বোট দুর্ঘটনায় দুই ডজনেরও বেশি পাকিস্তানি ডুবে যাওয়ার খবরে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন আমি। আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রককে দ্রুত ঘটনা সম্পর্কে যাবতী তথ্য সংগ্রহ করার নির্দেশ দিয়েছি।' উল্লেখ্য, এশিয়া ও আফ্রিকার যুদ্ধবিদ্ধস্ত বহু দেশ থেকেই শরণার্থীরা তুরস্ক হয়ে ইউরোপের অন্যান্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করেন। মানব পাচারকারীরা। শরণার্থীদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তুরস্ক থেকে সমুদ্রপথে তাদের ইতালিতে পাঠায়। কখনও কখনও দিনের পর দিন জাহাজের কন্টেনারে বন্ধ অবস্থায় থাকতে হয় এই শরণার্থীদের। কখনও কয়েক হাজার মাইল পথ পাঁটতে হয়। বা কখনও এভাবে একটি কাঠের ভেলায় সমুদ্র পাড়ি দিতে হয় নতুন জীবনের আশায়।
রাষ্ট্রসংঘের নিখোঁজ অভিবাসী প্রকল্পের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে মধ্য ভূমধ্যসাগরে ১৭ হাজারেরও বেশি শরণার্থীর মৃত্যু হয়েছে বা তারা নিখোঁজ হয়েছেন। শুধুমাত্র এই বছরই মৃতের সংখ্যা ২২০ জনেরও বেশি বলে অনুমান করা হচ্ছে। রবিবারের ঘটনায় মৃত ৫৯ জনের মধ্যে ১২ জন শিশু রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে ইতালির নয়া ডানপন্থী সরকার এই ধরনের শরণার্থীদের উদ্ধার এবং তাদের ত্রাণ সরবরাহের ক্ষেত্রে কঠোর আইন এনেছে। যার সমালোচনা করেছে রাষ্ট্রসংঘ। অবশ্য ঘটনার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেডোসি। জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার কবলে পড়া নৌকাটি প্রায় চার দিন আগে তুরস্কের পশ্চিমাঞ্চলীয় ইজমির বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। এদিকে সমুদ্রে নৌকাটি চিহ্নিত হওয়ার পরই উপকলরক্ষী বাহিনী পাঠানো হয়েছিল তাদের তীরে আসতে বারণ করার জন্য। তবে আবহাওয়া খারাপ হওয়ার কারণে উপকূলরক্ষী বাহিনীর বোটগুলিকে ফিরে আসতে হয়েছিল।