রাহুল গান্ধীকে সংসদে পাঠিয়ে ভুল করেছে রাজ্য, কেরালা লিট ফেস্টে গিয়ে বললেন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ। তাঁর মতে পঞ্চম প্রজন্মের রাজনীতিবিদ রাহুল গান্ধী কখনোই সেল্ফ মেড ম্যান নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে পেরে ওঠা সম্ভব নয়।
গুহ জানান যে তাঁর রাহুলের সঙ্গে ব্যক্তিগত স্তরে কোনও সমস্যা নেই। বরং তাঁকে খুব ভদ্র, নম্র মনে হয়। কিন্তু নয়া ভারত পরিবারবাদের বিরুদ্ধে বলে রামচন্দ্রের বিশ্বাস। তাঁর মতে কেরলবাসী খুব বড় ভুল করবেন যদি পরের নির্বাচনেও তাঁরা রাহুল গান্ধীকে জেতান, কারণ এতে আখেরে নরেন্দ্র মোদীর হাত শক্ত হবে। প্রসঙ্গত আমেঠি ছাড়াও ওয়েনাড থেকে ২০১৯ নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন রাহুল। আমেঠিতে হারলেও ওয়েনাডে রেকর্ড ভোটে জিতে সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি।
রামচন্দ্র গুহর মতে রাহুলকে জেতানো খুব বড় ভুল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিভিন্ন গুনও তুলে ধরেন তাঁর তীব্র সমালোচক গুহ। তাঁর মতে মোদীর পরিবারের কোনও রাজনীতির সঙ্গে যোগ ছিল না।। মোদী দীর্ঘ দিন রাজ্যপাট সামলেছেন, প্রচন্ড কাজ করেন ও কোনও ছুটি নেন না। এগুলি নবীন প্রজন্মকে আকৃষ্ট করে বলে মনে করেন ইতিহাসবিদ।
ব
বিভিন্ন সময় বিজেপি ও মোদীর বিরুদ্ধে মুখর হয়েছেন গুহ। হালে সিএএ বিরোধী প্রতিবাদের সময় বেঙ্গালুরুতে তাঁকে আটকও করা হয়। সোনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন তিনি। তাঁর মতে দেশে গণতন্ত্র আরও ডালপালা মেলছে, সামন্ততন্ত্রের ধীরে ধীরে অবসান হচ্ছে। কংগ্রেসের শক্তিও কমছে। কিন্তু দিল্লি নিবাসী সোনিয়াকে তাঁর চামচারা বলছেন যে এখনও রাজত্ব আছে।
নিজের উত্তরাধিকারদের ব্যর্থতার দায় এখনও জওহারলাল নেহরুকে নিতে হচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি। তাঁর মতে নেহরু পরিবার রাজনীতি থেকে সরে এলেই নিজের কাজের দায় মোদীকে নিজেই নিতে হবে। আর কারুর ওপর দোষ চাপাতে পারবেন না।
কংগ্রেস পরিবারতান্ত্রিক হয়ে ওঠাতেই হিন্দুত্বের রাজনীতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বলে তাঁর দাবি। একই সঙ্গে বামপন্থীদেরও ছেড়ে কথা বলেননি তিনি। তাঁর মতে অনেক সময়েই বামপন্থীরা ভারত ছাড়া অন্য দেশকে বেশি ভালোবালেন। একই সঙ্গে ইসলামিক উগ্রপন্থী চিন্তাধারায় বৃদ্ধি ও সাড়া বিশ্ব জুড়ে জাতীয়তাবাদ বোধের উত্থানের ফলেও হিন্দুত্ববাদী শক্তি দেশে নিজেদের জায়গা দখল করেছে বলে রামচন্দ্র গুহর অভিমত। এক কথায়, পরিবারতান্ত্রিক কংগ্রেস ও বামপন্থী শক্তিদের ব্যর্থতার জন্যেই বিজেপি আজ দেশ শাসন করছে বলে আক্ষেপ ইতিহাসবিদের।