পেনশনের টাকা তুলতে একশো বছর বয়েসি মা-কে খাটিয়া সমেত টেনে ব্যাঙ্কে হাজির করলেন তাঁর ৬০ বছর বয়েসি মেয়ে। ওডিশার প্রত্যন্ত গ্রামের ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলল।
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, গত ১০ জুন ওডিশার নুয়াপাড়া জেলার বরগাঁও গ্রামের প্রৌঢ়া বাসিন্দা পুঞ্জিমাতা দেই তাঁর অতিবৃদ্ধা শয্যাশায়ী মা লাভে বাঘেলকে খাটিয়ায় শুইয়ে কাঁচা সড়ক ধরে টানতে টানতে স্থানীয় উৎকল গ্রামীণ ব্যাঙ্ক থেকে ১,৫০০ টাকা তুলতে উপস্থিত হন। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিয়ো পোস্ট করার পরে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের অমানবিক আচরণের অভিযোগে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
অভিযোগ, ৯ জুন সকালে ব্যাঙ্কে গেলে পুঞ্জিমাতাকে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার বলেন, অ্যাকাউন্টের মালিক সশরীরে উপস্থিত না হলে পেনশনের টাকা দেওয়া যাবে না। নিরুপায় হয়ে তাই খাটিয়ায় শচ্যাশায়ী মা-কে টেনে নিয়ে ব্যাঙ্কে হাজির করেন প্রৌঢ়া। ম্যানেজারও তাঁদের হাতে পেনশনের অর্থ দেন।
করোনা সংকট মোকাবিলায় গত মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ প্রকল্পে দরিদ্র শ্রেণির মহিলাদের জনধন অ্যাকাউন্টে এপ্রিল মাস থেকে মাসিক ৫০০ টাকা সাহায্য দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার।
এ দিকে, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের জবাবে নুয়াপাড়ার জেলাশাসক মধুস্মিতা সাহু জানিয়েছেন, ৯ জুন ব্যাঙ্কে গেলে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার জানান, নথিপত্র যাচাই করতে একদিন সময় লাগবে। এই কারণে পরের দিন পুঞ্জিমাতার বাড়িতে নিজেই যাবেন বলে জানান ম্যানেজার।
ব্যাঙ্কের ওই শাখা মাত্র একজন কর্মীকে সামলাতে হয় বলেই এই বিলম্ব, দাবি জেলাশাসকের। কিন্তু তাঁর অপেক্ষায় না থেকে পরের দিন মা-কে নিয়ে সটান ব্যাঙ্কে হাজির হন পুঞ্জিমাতা, এমনই দাবি জেলাশাসকের।
প্রসঙ্গত, বয়স্ক নাগরিক এবং বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের জন্য ব্যাঙে্ক কর্তৃপক্ষকে বিশেষ পরিষেবা দেওয়ার নির্দেশ আগেই দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এর মধ্যে রয়েছে অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের বাড়ি গিয়ে নগদ প্রদান, অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া নগদ সংগ্রহ, কেওয়াইসি নথিপত্র সংগ্রহ, ডিমান্ড ড্রাফ্ট সরবরাহের মতো পরিষেবা।