অসমে আটটি বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর মোট ৬৪৪ জন জঙ্গি আত্মসমর্পণ করলেন। গুয়াহাটিতে বৃহস্পতিবারর এই ঘটনা এ পর্যন্ত বৃহত্তম আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
জানা গিয়েছে উলফা (ULFA-I), ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট অফ বোড়োল্যান্ড-সংবিজিত (NDFB-S), কামতাপুর লিবারেশন অর্গ্যানাইজেশন (KLA), ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট অফ বেঙ্গলিস (NLFB), রাভা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (RNLF), সিপিআইএমএল, ন্যাশনাল সাঁওতাল লিবারেশন আর্মি (NSLA) এবং আদিবাসী ড্রাগন ফাইটার্স (ADF) সংগঠনের আত্মসমর্পণকারী জঙ্গিরা এ দিন অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়ালের সামনে অস্ত্র সমর্পণ করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাষণে জানান, ‘অসমের জন্য আজ এক স্মরণীয় দিন। শান্তি ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়। এখানে উপস্থিত সব ভাইদের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, তাঁদের পুনর্বাসনের জন্য গঠিত সরকারি প্রকল্পের সুবিধাগুলি নিয়ে দেশ গঠনে অবদান রাখুন।’
এ দিন আত্মসমর্পণের পরে NLFB-এর স্বঘোষিত কম্যান্ডার ইন চিফ কমল পাল বলেন, ‘অসমে বাঙালিদের নিরাপত্তার প্রয়োজনে আমরা ২০১১ সালে এই সংগঠন গড়ি। এখন আমরা মনে করছি, এই বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করছে বর্তমান রাজ্য সরকার। তাই আমরা অস্ত্র সমর্পণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
আত্মসমর্পণকারী জঙ্গিদের থেকে ১৭৭টির বেশি আগ্নেয়াস্ত্র, ১৬৮৬ গুলিগোলা, ২ কেজি বিস্ফোরক, ৫২টি গ্রেনেড, ৭১টি বোমা, ৩টি রকেট লঞ্চার, ৫৮টি ম্যাগাজিন এবং ৩০০টিরও বেশি ডিটোনেটর উদ্ধার হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী সোনোওয়াল বলেন, ‘যাঁরা এখনও বাইরে রয়েচেন, তাঁদের কাছে আবেদন জানাচ্ছি মূলস্রোতে যোগ দিন। অসমকে দেশের একত নম্বর রাজ্য হিসেবে গড়ে তুলতে শান্তি প্রক্রিয়া ও কর্ম উদ্যোগে অংশগ্রহণ করুন।’
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিনের অনুষ্ঠান অনেকটাই প্রতীকী ছিল কারণ এর আগে মায়ানমার থেকে তাড়া খেয়ে পালিয়ে এসে সেনাবাহিনী ও পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন বহু জঙ্গি। তাদের থেকে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র ইতিমধ্য়ে উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
অন্য দিকে ULFA-I কম্যান্ডার ইন চিফ পরেশ বড়ুয়া স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে ফোনে জানিয়েছেন, ‘এ সব সরকারের চমক দেওয়ার চেষ্টা। আমাদের যে সমস্ত ক্যাডার আজ অস্ত্র সমর্পণ করেছেন, তাঁর এর অনেক আগেই আত্মসমর্পণ করেছেন। সরকারের মতলব কাজে দেবে না। আমরা আবার শক্তি সঞ্চয় করব।’