আরও একবার ছাত্র আন্দোলন ঘিরে সংঘাতের ছবি দেখা গেল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বুকে। রাতভর প্রতিবাদ, সংঘাতের মাঝে পড়ুয়ারা কর্তপক্ষকে সময় দিয়েছিল ৪ ঘণ্টার। আর তড়িঘিড় বৈঠক ডেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিল তাদের আওতা থেকে বাংলাদেশের ৭ কলেজ বেরিয়ে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনার আমলে এক ছাত্র আন্দোলন দেখেছে বাংলাদেশ। ইউনুসের আমলে সবেমাত্র একটি ছাত্র আন্দোলনের স্ফূলিঙ্গ দেখা যায়। তবে তা শুরুতেই স্তিমিত করতে তৎপরতা? বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৭ কলেজকে আওতামুর্ত করার ঘটনা অন্তত সেরকমই আভাস দিচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে।
বাংলাদেশের ‘বিডি নিউজ’র খবর, বহুদিন ধরেই এই সাত কলেজের পড়ুয়ারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। গত বছর বাংলাদেশের ক্ষমতার পালাবদলের সময় থেকেই এই আন্দোলনের জন্ম। সদ্য তাঁদের দাবি দাওয়া নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদের কাছে গিয়েছিলেন পড়ুয়ারা, কিন্তু সহউপাচার্য তাঁদের ‘অপমান’ করেন বলে অভিযোগ করেন তাঁরা। সহ উপাচার্য তাঁদের নিজের ঘর থেকে বের করে দেন বলেও অভিযোগ। এরপর পড়ুয়ারা সহ উপাচার্য যাতে ক্ষমা চান, এমন দাবি করেন। তার আগে, ঢাকার শাহবাগ, সায়েন্স ল্যাব ও টেকিনিক্যাল মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। রাতের দিকে সায়েন্সল্যাব মোড় থেকে মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দিকে রওনা হন ক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা। তাঁরা নীলক্ষেত মোড় হয়ে ক্যাম্পাসের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে অবস্থান নেন। এক পর্যায়ে তাঁরা সহউপাচার্যের বাসভবনে অভিমুখে রওনা হওয়ার ঘোষণা করেন।
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হল থেকে লাঠি সোঁটা নিয়ে স্যার এ এফ রহমান হলের সামনে জড়ো হতে থাকেন। মধ্যরাতে শুরু হয় সংঘর্ষ, উত্তেজনা। এদিকে, সাতটি কলেজ মিলিয়ে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় করার ডাক দেন অবস্থানে অনড় পড়ুয়ারা। সোমবার সকাল থেকেই পড়ুয়ারা নিজের নিজের কলেজের সামের রাস্তা অবরোধ করেন। ৪ ঘণ্টার ডেডলাইন দিয়ে তাঁদের দাবি মেনে নেওয়ার দাবিও জানানো হয়। বিকেল ৪ টের মধ্যে তাঁদের দাবি মেনে না নিলে, বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন পড়ুয়ারা। এদিকে, দুপুর সাড়ে ১২টায় জরুরি সভায় বসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সাত কলেজের অধ্যক্ষরা।
সোমবার দুপুরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতা থেকে মুক্ত হচ্ছে ৭ কলেজ। যার ফলে, ২০২৪-২৫ সেশন থেকে ওই সাত কলেজের জন্য আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পড়ুয়াদের ভর্তি করা হবে না। এই কলেজগুলোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্মানজনক পৃথক্করণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে, বলে জানানো হয়।