বাংলা নিউজ > ঘরে বাইরে > ৫ দশক পর নিজেকে ভারতীয় প্রমাণ করার লড়াইয়ে অসমে বসাবসরত ৮০ বছরের ভাণ্ডারী দাস!

৫ দশক পর নিজেকে ভারতীয় প্রমাণ করার লড়াইয়ে অসমে বসাবসরত ৮০ বছরের ভাণ্ডারী দাস!

ভাণ্ডারী দাস (ছবি সৌজন্যে হিন্দুস্তান টাইমস)

১৯৭০ সালে ভারতীয় ভোটার হলেও দীর্ঘ পাঁচদশক পর নিজের ভোটাধিকার হারালেন অসমে বসাবসরত ভাণ্ডারী দাস। 

বিগত পাঁচ বছর ধরে অসমের কাছার জেলাতেই বাস ৮০ বছর বয়সী ভাণ্ডারী দাসের। ১৯৬৭ সালে তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে সীমান্ত পার করে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে আসার পর কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে 'রিলিফ এলিজিবিলিটি সার্টিফিকেট' প্রদান করেছিল। এরপর ১৯৭০ সালে তিনি ভারতীয় ভোটার হন। এরপর পার হয়ে গিয়েছে পাঁচ পাঁচটা দশক। আজ এত বছর পর ভাণ্ডারীদেবী 'বিদেশি'। নিজের জীবনের শেষ লগ্নে এসে তাঁকে লড়তে হবে নাগরিকত্ব প্রমাণের লড়াই।

২০১৯ সালের এনআরসি-তে নাম ছিল ভাণ্ডারীদেবীর। তবে ২০০৮ সালে তাঁর বিরুদ্ধে ফরেনার্স ট্রাইবুনালে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন তত্কালীন পুলিশ সুপার (সীমান্ত)। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই আদালত রায় দিল যে তিনি 'বিদেশি'। অর্থ, আগামী দশকের জন্য ভাণ্ডারী দাস নিজের ভোটাধিকার হারাবেন।

তবে ভোটাধিকার হারানো নিয়ে চিন্তিত নন ভাণ্ডারীদেবী। তাঁর সাফ বক্তব্য, 'আগামী দশ বছরে আমি এবং আমার পরিবার ভারতের স্থায়ী নাগরিক হয়ে যাব।' এই স্বস্তির কারণ ভাণ্ডারীদেবীকে বেআইনি বিদেশি আখ্যা দেওয়া হয়নি। আপাতত ভোটাধিকার হারালেও পরবর্তীতে তিনি ভারতীয় নাগরিক হয়ে যাবেন।

জানা গিয়েছে ১৯৬১ সালে ১৩ বছর বয়সে সিলেটে রাজেন্দ্র দাসকে বিয়ে করেন ভাণ্ডারীদেবী। এর ছয় বছর পর রাজেন্দ্র এবং ভাণ্ডারী দাস সীমান্ত পার করে ভারতে চলে আসেন। এই বিষয়ে ভাণ্ডারীদেবী বলেন, 'আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে আমাদেরকে সেখানে (পূর্ব-পাকিস্তান) অত্যাচার সহ্য করতে হত। আমাদেরকে সবদিক দিয়ে আক্রমণ করা হত। আমরা ছাড়াও আমাদের বহু প্রতিবেশী ভারতে চলে আসে। এটা আমাজের জন্য সবথেকে কঠিন সময় ছিল। যখন আদালতের রায় আসে, আমি ভাবি আমাকে বাংলাদেশে ফইরতে হবে। আমি তা করতে চাই না।' ২০০৯ সালে ভাণ্ডারীদেবীর স্বামী রাজেন্দ্র মারা যান। বর্তমানে তিনি তাঁর ছেলে রাজকমল দাস এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে থাকেন। রাজকমলের জন্ম ১৯৭১ সালে ভারতের ভোলানাথপুরে।

 

বন্ধ করুন