কাঁটাতারহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের দীর্ঘ এলাকা। যার ফলে বাংলাদেশ সীমান্তে বাড়ছে অনুপ্রবেশের চেষ্টা। কারণ তারা মূলত কাঁটাতারহীন সীমান্ত দিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছে। এদিকে, ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত নিয়ে চরম উত্তেজনা চলছে। বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় কাঁটাতার দিতে বিএসএফকে বাধা দিচ্ছে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। এই অবস্থায় দুদেশের সীমান্তে কতটা এলাকায় কাঁটাতার নেই সেই তথ্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। মঙ্গলবার লোকসভায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই জানিয়েছে, ৪০৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের মধ্যে প্রায় ৮৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় কাঁটাতার নেই। এরমধ্যে ১৭৪.৫১৪ কিলোমিটারের দীর্ঘ ফাঁক রয়েছে। প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে একথা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সীমান্ত নিয়ে ভারতকে 'কোনও ছাড় দেওয়া হবে না', বৈঠকের আগে হুংকার বাংলাদেশের
প্রতিমন্ত্রী এই সব এলাকায় কাঁটাতার না দিতে পারার জন্য বেশ কিছু কারণ উল্লেখ করেছেন। তিনি জানান, জমি অধিগ্রহণ, বাংলাদেশের বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) আপত্তি, ভূমিধস, জলাভূমি প্রভৃতির কারণে এইসব এলাকায় কাঁটাতার দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তিনি জানান, সীমান্তে নিরাপত্তার জন্য কাঁটাতার গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি চোরাচালান, অনুপ্রবেশ, আন্তঃসীমান্ত অপরাধমূলক কার্যকলাপের মোকাবেলা করে। তিনি জনিয়েছেন, ভারত সরকার আশা করছে যে আগের সমস্ত সমঝোতা বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করবে। আন্তঃসীমান্ত অপরাধ মোকাবেলায় সহযোগিতামূলক দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে। বাংলাদেশ সরকারকে তা জানানো হয়েছে।
এদিকে, বিএসএফ জানিয়েছে, যে সীমান্তবর্তী স্থানে যেখানে ভূখণ্ডের কারণে কাঁটাতার দেওয়া সম্ভব নয়, সেখানে অনুপ্রবেশ এবং চোরাচালান রোধে নজর রাখার জন্য বাহিনী সেন্সর, সিসিটিভি ক্যামেরা, ফ্লাডলাইটের মতো প্রযুক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে। সেখানে বেশি জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন যে বিএসএফ বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে। অন্যদিকে, বিজেপি অভিযোগ করেছে যে তৃণমূল সরকার বাংলাদেশের সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়ার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করছে না। এরপরেই রাজ্য মন্ত্রিসভা রাজ্যের দুটি জেলায় বিএসএফকে কাঁটাতার দেওয়ার জন্য জমি দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। তথ্য অনুযায়ী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে জলপাইগুড়ি জেলার বিন্নাগুড়িতে ০.০৫ একর এবং মালদা জেলার নারায়ণপুরে ১৯.৭৩ একর জমি বিএসএফ-এর কাছে হস্তান্তর করা হবে।