উত্তর সিকিমে ফের ভয়াবহ বিপর্যয়। অন্তত ৬জনের মৃত্যু হয়েছে। বিরাট ধসের জেরে আরও দুজন আহত হয়েছেন। বুধবার সন্ধ্যা থেকেই প্রবল বৃষ্টি। সেই সঙ্গেই একের পর এক ধস নেমেছে উত্তর সিকিমে।
সিকিমের মঙ্গন জেলায় টানা বৃষ্টিপাতের জেরে বিরাট এলাকাজুড়ে ধস নেমেছে।
আবহাওয়া দফতর উত্তর সিকিমের জন্য লাল সতর্করা ও রাজ্যের অন্য জেলার জন্য কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
২০২৩ সালে হিমবাহ লেকে হড়পা বানে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল উত্তর সিকিমে। সেই সময় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। ফের ভয়াবহ পরিস্থিতি উত্তর সিকিমে।
সিকিমের মুখ্য়মন্ত্রী প্রেম সিং তামাং জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের সমস্ত রকম সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
মঙ্গন জেলার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা পুরো ধসে গিয়েছে।
মঙ্গনের জেলাশাসক হেম কুমার ছেত্রী হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছেন, লাচেন ও লাচুংয়ে প্রায় দু হাজার পর্যটক রয়েছেন। তবে তারা নিরাপদে রয়েছেন।
এদিকে কালিম্পংয়েও তিস্তার জলস্ফীতির জেরে বহু মানুষ ঘরছাড়া। কালিম্পংয়ের জেলাশাসক বালাসুহ্মমণিয়ম টি জানিয়েছেন, NH 10এ একাধিক বিপজ্জনক জায়গাকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
পেশক হয়ে দার্জিলিংগামী রাস্তা ডুবে গিয়েছে।
পরিস্থিতি এমনই যে ধসে রাস্তাঘাটের অনেকটা অংশ বন্ধ হয়ে গেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়ি ডুবে গেছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বিদ্যুতের খুঁটি ভেসে গেছে বলে জানা গিয়েছে।
মঙ্গনের পাকশেপ এলাকা থেকে একজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রংরাংয়ের কাছে অম্বিথাং থেকে তিনজন এবং পাকশেপ থেকে আরও দু'জন নিখোঁজ হন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, গেইথাংয়ে তিনটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পেন্টকের কাছে নামপাথাংয়ে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে গেছে।
সঙ্কলানে একটি সেতুর ভিত ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার জেরে সমস্যা ক্রমশ বাড়ছে। ভূমিধসের কারণে ব্রিংবং পুলিশ ফাঁড়িটি নিকটবর্তী অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।
উত্তর সিকিমে মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মঙ্গনে রেশন সহ একটি এসডিআরএফ দল পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছিল।
এদিকে, পরিস্থিতি সামাল দিতে বিভিন্ন দফতরের প্রধানদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন মঙ্গনের জেলাশাসক হেমকুমার ছেত্রী।
রাস্তা থেকে ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করতে মংশিলা ডিগ্রি কলেজের কাছে একটি আর্থমুভার মোতায়েন করা হয়েছিল।
সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং, যিনি বিজেপি নেত্রী পেমা খান্ডুর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে অরুণাচল প্রদেশে রয়েছেন, তিনি উত্তর জেলা প্রশাসন, পুলিশ এবং অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন যাতে ধ্বংসযজ্ঞের দ্রুত প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করা যায়।
এক বিবৃতিতে বিনয় তামাং বলেন, 'ক্ষতিগ্রস্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পুনরুদ্ধার সহায়তা, সাময়িক বন্দোবস্ত এবং মৌলিক চাহিদা পূরণসহ সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
রাজ্য সরকার দৃঢ়ভাবে এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার শিকারদের পাশে রয়েছে, শোকসন্তপ্ত পরিবার এবং ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্থ ও বাস্তুচ্যুত সকলকে সর্বোচ্চ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
তিনি শীঘ্রই ব্যক্তিগতভাবে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম তদারকি করতে রাজ্যে ফিরে আসবেন।