হাতি, সিংহ এবং অন্যান্য হিংস্র জীবজন্তুতে ভর্তি একটি জাতীয় উদ্যান। পথ হারিয়ে সেই উদ্যানে ঢুকে পড়েছিল বছর আটেকের এক শিশু। হিংস্র জীবজন্তুর মধ্যেই সেখানে এক সপ্তাহ ধরে কাটানোর পর অবশেষে বেঁচে ফিরল শিশু। উদ্ধারকারী দল তাকে জীবিত উদ্ধার করে। বিভিন্ন ধরনের হিংস্র প্রাণী থাকা সত্ত্বেও অবিশ্বাস্যভাবে বেঁচে ফিরেছে শিশুটি। ঘটনাটি ঘটেছে জিম্বাবোয়ের উত্তরাঞ্চলে। এই ঘটনাকে অনেকেই অলৌকিক ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করেছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে বাঘের হামলা, জঙ্গলে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা, মৃত্যু মৎস্যজীবীর
জিম্বাবোয়ের পার্লামেন্টের সদস্য মুতসা মুরোমবেদজি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে শিশুটির নিরাপদে ফিরে আসার খবরটি শেয়ার করেন। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে শিশুটির একটি ছবি পোস্ট করেছেন। তিনি বলেছেন, নিখোঁজ শিশুটিকে মাতুসাদোনহা জাতীয় উদ্যান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ওই শিশুর নাম টিনোতেন্ডা পুডু। মাতুসডোনা জাতীয় উদ্যানের তরফে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এক সপ্তাহ আগে শিশুটি কাসভিসভায় তার বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে চলে গিয়েছিল। এই উদ্যানটি হাতি, সিংহ এবং মহিষ সহ বিপজ্জনক বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল। খবর পেয়ে, সেখানে উদ্ধার অভিযান চালানো হয়। তবে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে অনুসন্ধান ব্যাহত হয়েছিল। কারণ শিশুর পায়ের ছাপ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে সোমবার সাকাটা উপত্যকা এলাকায় তার পায়ের ছাপ পাওয়া যায়। এর ফলে পরের দিন শিশুকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
জানা গিয়েছে, স্থানীয় ন্যামিনিয়ামি সম্প্রদায় শিশুকে খুঁজে বের করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে। প্রতিদিন, তারা ড্রাম বাজিয়ে শিশুকে উদ্ধারের চেষ্টা করত, এই আশায় যে শিশুটি শব্দ শুনতে পাবে এবং তারফলে সে বাড়িতে ফিরতে পারবে। এরমধ্যে পঞ্চম দিনে জঙ্গলের ভিতরে একটি গাড়ির শব্দ শুনতে পায় টিনোতেন্ডা। সেই শব্দ লক্ষ্য করে রেঞ্জারের গাড়ির দিকে ছোটা শুরু করে শিশুটি। কিন্তু, তার পৌঁছনোর আগেই।শিশু সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে রেঞ্জাররা এলাকায় ফিরে আসে এবং ছোট ছোট পায়ের ছাপ খুঁজে পায়। তারা সেই ছাপ অনুসরণ করে এবং অবশেষে ছেলেটিকে খুঁজে পায়।
মুরোম্বেদজি জানান, এটিই ছিল শিশুটিকে উদ্ধারের শেষ সুযোগ। তিনি পার্ক রেঞ্জার এবং ন্যামিনিয়ামি সম্প্রদায়কে তাদের নিরলস প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি লেখেন, ‘আমরা সাহসী পার্ক রেঞ্জারদের প্রতি কৃতজ্ঞ, অক্লান্ত ন্যামিনিয়ামি সম্প্রদায় যারা ছেলেটিকে শব্দ শোনানোর জন্য প্রতিদিন ড্রাম বাজিয়ে গিয়েছিল তাদের ধন্যবাদ জানাই।’ তিনি টিনোটেন্ডাকে নিরাপদে রাখার জন্য এবং বাড়িতে নিয়ে ফেরার জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।