দুই সন্তানকে খুনের অভিযোগে ২৫ বছরের এক মহিলা ও তাঁর ৩০ বছরের সঙ্গীকে গ্রেফতার করল বেঙ্গালুরুর রামনগর জেলা পুলিশ। ডেকান হেরাল্ড পত্রিকার প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, সন্দেহভাজন হামলাকারীদের সুইটি ও গ্রেগরি ফ্রান্সিস হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে দুজনকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। ২ বছর বয়সি কাবিলা ও ১১ মাস বয়সি কাবিলানকে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যে সুইটি এবং ফ্রান্সিস দুই মাস আগে ট্যানারি রোডের একটি পার্কে দেখা করার পরে তাদের সম্পর্ক শুরু করেছিলেন। বিবিএমপি কর্মী শিবুর সঙ্গে সুইটি ফ্রান্সিসের গোপন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বলে জানা গিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত দু'মাস ধরে এই দম্পতি ঘন ঘন রামনগরে যাতায়াত করতেন, যা বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলত।
২৭ সেপ্টেম্বর সুইটি ও ফ্রান্সিস সন্তানদের নিয়ে একটি ভাড়া বাড়িতে ওঠেন। পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে যখন ১ অক্টোবর কাবিলাকে হত্যা করা হয়, এর কয়েকদিন পর ৭ অক্টোবর কাবিলানের মৃত্যু হয়। পুলিশ রিপোর্টে বলা হয়েছে, সুইটি তার সন্তানদের মারাত্মক শারীরিক ক্ষতি করেছে, শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, সুইটি শিশুদের পিঠে বেদম মারছিলেন। যার ফলে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়।
প্রথম সন্তানের শেষকৃত্যে কোন উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়নি; তবে, দ্বিতীয় সন্তানের মৃত্যুর পরে পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি সন্দেহের সৃষ্টি করেছিল। শ্মশানের এক কর্মী বুঝতে পারেন তড়িঘড়ি করে সৎকারের চেষ্টা করা হচ্ছে। এরপরই তিনি কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। এরপরই পুলিশ তদন্তে নামে।
পুলিশ জানতে পারে, প্রথমবার শ্মশানের কর্মীদের বলা হয়েছিল যে শিশুটি অসুস্থতার কারণে মারা গেছে। তবে দুটি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে স্বল্প সময়ের ব্যবধান থাকায় দ্বিতীয় সন্তানকে শ্মশানে নিয়ে আসার সময় সন্দেহ দেখা দেয়। শ্মশান কর্তৃপক্ষ গোটা ঘটনার ভিডিও করে পুলিশের নজরে আনে।
আরও জিজ্ঞাসাবাদের পরে পুলিশ এই জুটিকে গ্রেপ্তার করে, যারা পরে অপরাধ স্বীকার করে। তদন্তকারীরা বুঝতে পারেন ওই দুটি বাচ্চা তাদের সম্পর্কের মাঝে কাঁটা হিসাবে দেখা দিয়েছিল। তারপরই তারা দুজনকে খুনের পরিকল্পনা করে।
কার্যত সন্তানকে খুন করেও শেষ রক্ষা হল না। শ্মশান কর্তৃপক্ষের তৎপরতায় ধরা পড়ে যায় ওই দম্পতি। খুনের কথা স্বীকারও করে নিয়েছে তারা।