কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এক মহিলা চিকিৎসককে ভয়াবহ ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে ক্ষোভ তৈরি করেছে। দেশ জুড়ে এনিয়ে প্রতিবাদের ঝড়। তার মধ্যে ওড়িশার এসসিবি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের দুই রোগিনী এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মেডিকেল পরীক্ষার নাম করে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন।
মঙ্গলবার আধিকারিকরা জানিয়েছেন, শুক্রবার মেডিক্যাল কলেজের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীর মা ও কাকিমা চেকআপের জন্য কার্ডিওলজি বিভাগে গিয়েছিলেন। দুই মহিলাকে ইকোকার্ডিওগ্রাম করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল এবং রবিবার পুনরায় দেখার জন্য আসতে বলা হয়েছিল।
তবে মহিলারা অভিযোগ করেছেন যে কার্ডিওলজির এমডির ছাত্র পুরুষ চিকিৎসক ইসিজির অজুহাতে পেট এবং শরীরের অন্যান্য অংশগুলি পরীক্ষা করেছিলেন। ওই দুই নারীর বিষয়টি একেবারেই ভালো লাগেনি। তাঁরা এমবিবিএস ছাত্রীর কাছে অভিযোগ করলে তিনি তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানান।
অভিযুক্ত চিকিৎসককে জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের তরফে তলব করা হলে এমবিবিএসের অন্য পড়ুয়ারা তাঁকে মারধর করে বলে অভিযোগ। গুরুতর আহত হয়ে তিনি বর্তমানে একই হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
দুই মহিলা প্রথমে মামলা করতে দ্বিধা করলেও মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র চিকিৎসকরা তাঁদের হস্তক্ষেপ করায় এফআইআর দায়ের করেন।
ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬১ ও ১৬৪ ধারায় নির্যাতিতাদের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১১ আগস্ট। ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলছে এবং সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যেহেতু ঘটনাটি স্পর্শকাতর, তাই আমরা বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করতে চাই না। অতিরিক্ত ডিসিপি অনিল মিশ্র বলেন, 'আমরা ক্ষতিগ্রস্থদের বয়ান রেকর্ড করব এবং সেই অনুযায়ী তদন্ত করব।
মিশ্র আরও বলেছিলেন যে যে পুরুষ ডাক্তারকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে তিনিও যদি অভিযোগ করতে চান তবে পুলিশ এফআইআর দায়ের করবে।
অন্যদিকে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে একাধিক নির্দেশিকা জারি করেছে এনএমসি।
এবার সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ ও প্রতিষ্ঠানে কর্মস্থল যাতে মহিলাদের জন্য সুরক্ষিত থাকে সেটা নিশ্চিত করার জন্য একাধিক নির্দেশিকা জারি করেছে ন্যাশানাল মেডিক্যাল কমিশন। সেখানে বলা হয়েছে সাম্প্রতিক অতীতে মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের হিংসার মুখে পড়তে হয়েছিল। সেক্ষেত্রে সমস্ত মেডিক্যাল কলেজকে বলা হচ্ছে তারা যেন নিরাপদ কাজের পরিবেশ তৈরি করার জন্য একটা পলিসি তৈরি করেন। ওপিডি, ওয়ার্ড, হস্টেল সহ বিভিন্ন জায়গায় যাতে যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকে সেটা সুনিশ্চিত করার জন্য বলা হয়েছে। করিডর ও ক্য়াম্পাসের বিভিন্ন অংশে যাতে আলো থাকে তার ব্যবস্থা করার জন্য বলা হয়েছে। সমস্ত সংবেদনশীল এলাকায় সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করার জন্য বলা হয়েছে।