এলাকায় ক্রমশ জাঁকিয়ে বসছে মাদকের কারবারিরা। তাদের খপ্পড়ে পড়ে জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে বহু মানুষের। তাই, এই কারবারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন এলাকারই এক ব্যবসায়ী। তার একটি ওষুধের দোকান রয়েছে। রোজগার হয় সেখান থেকেই। রবিবার (২৩ মার্চ, ২০২৫) সকালে যখন তিনি সেই ওষুধের দোকান খুলছেন, সেই সময়েই তাঁকে লক্ষ করে গুলি ছোড়ে আততায়ীরা। অভিযোগ, মাদক কারবারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন বলেই ওই ব্যবসায়ীকে নিশানা করা হয়েছে। এই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিহারের সুপাউল এলাকায়।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, গুলিবিদ্ধ ওই ব্যবসায়ীর নাম অরবিন্দ সিং ওরফে পাপ্পু সিং। তিনি আদতে সদর থানা এলাকার সুখপুর গ্রামের বাসিন্দা। কিন্তু, তাঁর ওষুধের দোকানটি রয়েছে সুপাউলে। বর্তমানে গুরুতর জখম ওই ব্যবসায়ী সুপাউলেরই একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর অবস্থা আপাতত আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকাল ৮টা নাগাদ বাড়ি থেকে নিজের দোকানে পৌঁছন অরবিন্দ। যখন তিনি দোকান খুলতে ব্যস্ত ছিলেন, সেই সময়েই সেখানে একটি মোটরবাইকে সওয়ার হয়ে দুই দুষ্কৃতী পৌঁছয়। তারা অরবিন্দকে গুলি করেই চম্পট দেয়। সেই গুলি লাগে অরবিন্দের বুকে। রক্তাক্ত হয়ে সেখানেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, সেখানকার চিকিৎসক তাঁকে আরও ভালো কোনও হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য রেফার করে দেন।
এরপর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় অরবিন্দকে। আপাতত সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। অরবিন্দের পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এলাকায় যে মাদকের কারবার লাগাতার বাড়ছে, তা নিয়ে বরাবর সরব থেকেছেন অরবিন্দ। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই কারণেই মাদকচক্রের সঙ্গে যুক্ত কোনও ব্যক্তি তাঁকে খুন করার চক্রান্ত করে এবং সেই কারণেই তাঁর উপর এই হামলা চালানো হয়।
এই প্রসঙ্গে অরবিন্দের ছেলে বান্টি সিং সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের জানান, 'যে লোক আমার বাবাকে গুলি করেছে, সে মাদকচক্রের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। আমার বাবা সকলের সামনেই ওর সমালোচনা করেছিল। সেই কারণে ও আমার বাবাকে গুলি করেছে।'
অন্যদিকে, স্থানীয় থানার এসএইচও অনিরুদ্ধ কুমার জানিয়েছেন, যাঁর বিরুদ্ধে ওই ব্যবসায়ীকে গুলি করার অভিযোগ উঠেছে, তিনি আক্রান্তের অত্যন্ত নিকট এক আত্মীয়!
শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, এই ঘটনায় আক্রান্তের পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ জানানো হয়নি। যদিও এসএইচও জানিয়েছেন, 'পুলিশ এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করবে। হামলার সমস্ত সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখা হবে। আমরা শুধু অপেক্ষা করছি, পরিবারের তরফে করা লিখিত অভিযোগের জন্য।'