নিউ দিল্লি স্টেশনে পদপিষ্টের ঘটনা কার্যত আয়নার সামনে দাঁড় করিয়েছে গোটা রেল ব্যবস্থাকে। কুম্ভের পথে স্টেশনে প্রচন্ড ভিড়। তাতেই পদপিষ্ট হয়ে একের পর এক যাত্রীর মৃত্যু। চোখের সামনে এই ভয়াবহ ঘটনা দেখেছেন অনেকেই। কেউ হারিয়েছেন মাকে, কেউ স্ত্রীকে, কেউ আবার পুত্রকন্য়াকে। তারা সকলেই ট্রেন ধরতে এসেছিলেন।
এক ব্যক্তি তাঁর ৭ বছরের কন্য়াকে হারিয়েছেন। ১৮জন মৃতের মধ্য়ে তার মেয়েও অন্য়তম। কুম্ভ মেলায় যাওয়ার জন্য তাঁরা ট্রেন ধরতে এসেছিলেন। আর সেখানেই ভয়াবহ বিপর্যয়। ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, আমার মেয়ের মাথায় পেরেক ঢুকে গিয়েছিল।
কী হয়েছিল শনিবার রাতে?
ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, আমরা ১৪ নম্বর প্লাটফর্ম থেকে নেমেছিলাম। এত ভিড় দেখে ফিরে আসছিলাম। আমি বলেছিলাম খুব ভিড় চলো বাড়ি ফিরে যাই। কারণ বাচ্চাদের এভাবে নিয়ে যাওয়া যাবে না। বাচ্চাদের নিয়ে কী করব! ওপিল সিং এনডিটিভিকে জানিয়েছেন। তাঁর কনফার্ম টিকিট ছিল।
‘আমরা ওপরের দিকে যাচ্ছিলাম। ৬টা সিঁড়ি বাকি ছিল। সেই সময় আমার মেয়েটা আটকে গেল। ওপর থেকে ৫-৬ হাজার মানুষ নামছিলেন। মানুষ একের পর এক আমাদের উপর পড়ে গেলেন। সেই সময় আমার মেয়ের মাথায় পেরেক ঢুকে গেল।’ আসলে তিনি ইউপির উন্নাওয়ের বাসিন্দা।
মেয়েকে হারিয়েছেন তিনি। কার্যত কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। একটা প্রশ্ন বার বার করে উঠছে, এর দায় কার?
ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আমি কী মিষ্টি বাচ্চা ছিল।’ চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি তিনি। মোবাইলে মেয়ের ছবি। সেটা আঁকড়ে কেঁদে চলেছেন তিনি।
তিনি দিল্লিতে শ্রমিকের কাজ করেন। তিনি কোনও সহায়তা পেয়েছিলেন কি না সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, একজন পুলিশ খালি বাঁশি বাজাচ্ছিল।
তিনি বলেন, ‘যখন মেয়েকে পেলাম, কোনও অ্যাম্বুল্যান্স ছিল না। একটা অটোতে চাপিয়ে নিয়ে গেলাম। দুটো কুলি ছিল। তারা ১০০ টাকা করে নিল। কেউ আমার পকেট থেকে মোবাইল, টাকা সব বের করে নিয়েছে।’ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন ওই কিশোরীকে।
এক চিকিৎসক বলেছিলেন আর একটু তাড়াতাড়ি আনলে হয়তো…আক্ষেপ বাবার।
এদিকে রেল মৃতের পরিবারকে ১০ লাখ করে ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করেছে। বাবার দাবি, ১০ লাখে তো মেয়েকে ফিরে পাব না।