আরিয়ান প্রকাশ
ভাগ্যটা সবার ভালো হয় না। কেউ কপাল গুণে বেঁচে যান। কেউ আবার হারিয়ে যান চিরতরে। আবার কেউ এমন অভিজ্ঞতা নিয়ে ফেরেন যা সারাজীবন তাঁকে তাড়া করে ফেরে।
এই যেমন রূপক দাস। পুদুচেরি যাওয়ার ট্রেন তিনি মিস করেছিলেন। এরপর তিনি হাওড়া-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেসে টিকিট বুক করেন। সেই অভিশপ্ত ট্রেন। পুদুচেরিতে একটা আঠার কারখানায় কাজ করেন তিনি। আসল বাড়ি অসমে। আসলে গর্ভবতী স্ত্রীকে বাড়িতে ছেড়ে দিয়ে তিনি কর্মস্থলে ফেরার জন্য টিকিট কেটেছিলেন।
কিন্তু তিনি পুদুচেরি যাওয়ার ট্রেনটি মিস করেন। এরপর তিনি করমণ্ডল এক্সপ্রেসে চেপে বসেন। কারণ তাঁকে সময়ের মধ্য়ে পৌঁছতেই হবে কর্মস্থলে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে তিনি তাঁর ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, আচমকাই একটা প্রচন্ড আওয়াজ পেলাম। বুঝতে পারছিলাম ট্রেনটা বেলাইন হয়ে গিয়েছে। বাইরে তাকিয়ে দেখলাম ইঞ্জিনটা একটা মালগাড়ির উপর উঠে গিয়েছে। আর ইঞ্জিন ছাড়াই ট্রেনটা এগোচ্ছে।
এরপর আর কিছু না ভেবেই তিনি কাঁচের জানালা ভেঙে ফেলেন। এরপর বাইরে লাফ দেন। এদিকে তার কিছুক্ষণের মধ্য়েই বেঙ্গালুরু-হাওড়া এক্সপ্রেসের সঙ্গে সংঘর্ষ। একেবারে গুড়িয়ে যায় বগিটা। অল্পের জন্য রক্ষা পান তিনি। পায়ে মারাত্মক আঘাত পান।
এরপরই ভয়ঙ্কর ঘটনার কথা শুনিয়েছেন তিনি। তিনি সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, করমণ্ডল এক্সপ্রেস থেকে একটা কাটা মাথা এমার্জেন্সি জানালা দিয়ে আমার দিকে ছিটকে এল। একেবারে ফুটবলের মতো গড়িয়ে যাচ্ছিল মুন্ডুটা। বুকের উপর উঠে এল। আর ভালো করে বলতে পারেননি তিনি। তিনি বলেন, এই দৃশ্য দেখার পর কয়েকদিন কিছু খেতে পারিনি।
তাঁর দাবি, ওড়িশার বালাশোরের একটি হাসপাতালে কয়েকদিন পড়েছিলাম। কোনও চিকিৎসা নেই। শেষ পর্যন্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এসেছিলেন হাসপাতালে। তাঁকে চিকিৎসার জন্য অনুরোধ করি।
ওই যুবক বলেন, অসম সরকার কোনও যোগাযোগ করেনি। শেষ পর্যন্ত ফেসবুকে একটি ভিডিয়ো আপলোড করি। সেই ভিডিয়ো দেখে ওড়িশায় বসবাসকারী একজন অসমিয়া মহিলা আমার কাছে আসেন। তিনি আমার ব্যাগটাও খুঁজে দেন। পরে সোমবার তাঁকে বালাশোর থেকে গুয়াহাটিতে নিয়ে যাওয়া হয়।আপাতত সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে।