পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য এবার নয়া উদ্যোগ নিল কেন্দ্রীয় সরকার। আধার সংযোগ করে তাঁদের অনন্য নম্বর নথিভুক্ত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনেকের চাকরি চলে গিয়েছে এবং মাথার ছাদটুকু পর্যন্ত নেই। তাই তাঁদের করোনার জেরে লকডাউনের সময় নিজেদের বাড়ি ফিরে যেতে হয়েছিল। যদিও সেই সময় কেন্দ্রের উদ্যোগ আশানুরূপ ছিল না বলে বিরোধীদের অভিযোগ।
এখন প্রশ্ন এই অনন্য নম্বর দিয়ে কী হবে? জানা গিয়েছে, এই নম্বর সাহায্য করবে প্রথম দেশের পরিযায়ী শ্রমিকদের ডেটাবেস তৈরি করতে। আর কিছু সাহায্য পৌঁছে দিতেও এই অনন্য নম্বরের ডেটাবেস কাজে লাগবে। গত মে মাসে এক সাক্ষাৎকারে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানান, পরিযায়ী শ্রমিকদের সাহায্য করাটা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কারণ কেন্দ্র, রাজ্য কারও কাছেই কোনও পরিযায়ী শ্রমিকদের ডেটাবেস ছিল না।
জানা গিয়েছে, সামাজিক সুরক্ষা কোড হল–শ্রম আইন সংস্কারের তিনটের মধ্যে একটা পথ যা পাশ করানো হয়েছে বাদল অধিবেশনে। প্রত্যেক অসংগঠিত শ্রমিকের জন্য এই ব্যবস্থা রাখা হযেছে। আসল বিলে এই ব্যবস্থা ছিল না। কিন্তু স্ট্যান্ডিং কমিটি জোর দেওয়ায় সরকারের ঘুম ভাঙে এবং আইনটি নিয়ে সরকার পুনরায় কাজ করতে শুরু করে। সামাজিক সুরক্ষা কোডের ১১৩(২) ধারায় বলা হযেছে, প্রত্যেক যোগ্য অসংগঠিত শ্রমিক আধার নম্বর দিয়ে আবেদন করতে পারবেন নিজেকে নথিভুক্ত করানোর জন্য এবং এই ধরনের শ্রমিকদের একটি স্বতন্ত্র নম্বর দেওয়া হবে।
সংসদের বাদল অধিবেশনে পরিযায়ী শ্রমিকদের সংখ্যা নিয়ে একটি বিভ্রান্তি তৈরি হয়। কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গাঙওয়ার এই বিষয়ে জানান, এমন কোনও ডেটা সংরক্ষণ করা হয় না। যার জেরে বিরোধী দলগুলির তীব্র প্রতিবাদ দেখা যায়। তবে ১০.৪ মিলিয়ন পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। একমাত্র রেল মন্ত্রকের ডেটা সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু যাঁরা বাসে বা ট্রাকে করে ফিরেছেন তাঁদের তথ্য নেই।
তবে এবার এই উদ্যোগ পরিযায়ী শ্রমিকদের সাহায্যে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের এক ছাতার তলায় নিয়ে আসা যাবে। আর এই নম্বরের মাধ্যমে সরকারি সাহায্যও পৌঁছে যাবে তাঁর কাছে। সে যেখানেই থাকুক না কেন, বলছেন ভারতুহারি মেহতাব। যিনি সংসদের শ্রম মন্ত্রকের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান।
ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার অসংগঠিত ক্ষেত্রের জন্য বেকারত্বের সুবিধা এবং বিনামূল্যে রেশন–সহ ৫০ হাজার কোটি টাকার কাজ ২৫টি প্রকল্পের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিরোধীদের দাবি, পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশার মধ্যে ফেলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এখন স্বতন্ত্র নম্বর দিয়ে কাজ দেখাচ্ছে। যেখানে তাঁদের এখন চাকরি দরকার।