বছর ঘুরলেই দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচন। তার ঠিক আগেই পুরোনো একটি তোলাবাজির মামলায় গ্রেফতার করা হল আম আদমি পার্টি (আপ)-র বিধায়ক নরেশ বালিয়ানকে। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, সংশ্লিষ্ট মামলাটি গত বছর রুজু করা হয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, সংশ্লিষ্ট মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য দিল্লির উত্তম নগর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক নরেশন বালিয়ানকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। সেই মতো, আর কে পুরমায় অবস্থিত দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসে পৌঁছে যান তিনি। পরে সেখানেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, সম্প্রতি বিজেপির তরফে অভিযোগ করা হয়, তোলাবাজির একটি মামলার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন নরেশ বালিয়ান। আপ প্রধান তথা দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকেও এক্ষেত্রে নিশানা করে গেরুয়া শিবির। তাদের বক্তব্য ছিল, কেন সবকিছু জানা সত্ত্বেও কেজরিওয়াল বালিয়ানের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করছেন না?
বিজেপির এই দোষারোপের পরই আপ নেতাকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং পরবর্তীতে তাঁর গ্রেফতারি নিয়ে স্বাভাবিকভাবে নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পুরো ঘটনায় দিল্লি পুলিশের ভূমিকা এবং এর পিছনে আদতে কোনও রাজনীতি রয়েছে কিনা, তা নিয়েও চুলচেরা গবেষণা চলছে!
ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় দলের পক্ষ থেকে পাশে থাকার আশ্বাস পেয়েছেন ধৃত আপ নেতা তথা বিধায়ক। আপ নেতৃত্বের বক্তব্য হল, বালিয়ানকে বেআইনিভাবে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ।
অন্যদিকে, নরেশ বালিয়ান নিজেও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে পালটা রাজনৈতিক চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন। নরেশের বক্তব্য, যাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা রটনা করছেন, তিনি তাঁদের সকলের বিরুদ্ধে আইন অনুসারে পদক্ষেপ করবেন।
এই ঘটনায় পুলিশের বক্তব্য হল, সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় একটি অডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হয়। দাবি করা হচ্ছে, সেই অডিয়োয় যাঁদের কথা বলতে শোনা যাচ্ছে, তাঁদের মধ্যে একজন হলেন আপ বিধায়ক নরেশ বালিয়ান এবং অন্যজন কুখ্যাত গ্যাংস্টার কপিল সাঙ্গোয়ান। কপিল বর্তমানে ভারতে নেই বলে দাবি করা হচ্ছে।
পুলিশের দাবি, ওই ভাইরাল অডিয়ো ক্লিপিংয়ে সংশ্লিষ্ট দুই বক্তাকে ধনী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তোলাবাজি করা নিয়ে পরিকল্পনা করতে শোনা গিয়েছে। পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। বিভিন্ন লোককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে আপ সাংসদ সঞ্জয় সিং বলেন, যেদিন থেকে অরবিন্দ কেজরিওয়াল দিল্লির বেহাল আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, সেদিন থেকেই আপ নেতা, কর্মী ও জনপ্রিনিধিদের হেনস্থা করা হচ্ছে। নানাভাবে চক্রান্ত করে তাঁদের ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
সঞ্জয় বলেন, এই চক্রান্তের জেরেই নরেশ বালিয়ানকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
আপ সাংসদের আরও অভিযোগ, বিজেপি নেতারা একটি ভুয়ো অডিয়ো ক্লিপিং চারিদিকে ছড়াচ্ছেন। এমনকী, হাইকোর্টের অর্ডার এর বিরুদ্ধে যাওয়ার পরও তাঁরা ক্ষান্ত হননি। নরেশ বালিয়ান নিজেই পুলিশকে জানিয়েছিলেন যে তাঁকে একাধিকবার হুমকি দিয়েছেন গ্যাংস্টার কপিল সাঙ্গোয়ান।