দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগেই কি বড়সড় ভাঙন ধরতে চলেছে INDIA শিবিরে? এই প্রশ্ন উঠছেই। কারণ, রাজধানীতে ভোটের মুখে INDIA-এর সবথেকে বড় শরিক কংগ্রেসকে নিশানা করেছে আম আদমি পার্টি (আপ)। তাদের বক্তব্য, INDIA-এর অন্য়ান্য শরিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনা করবে তারা - কংগ্রেসকে এই জোট থেকে বের করে দেওয়া যায় কিনা!
কারণ, কংগ্রেসের আচরণে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়েছে আপ। আসলে, কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে কাঠগড়ায় তুলে অভিযোগ করা হয়, দিল্লির বর্তমান রাজ্য সরকার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এমনকী, স্বয়ং কেজরিওয়ালকেও কার্যত মিথ্যাবাদী বলে দেগে দেওয়া হয়েছে কংগ্রেসের তরফে। কংগ্রেসের অভিযোগ, যে সরকারি প্রকল্পের আদতে কোনও অস্তিত্বই নেই, সেই প্রকল্পকে শিখণ্ডী করেই নাকি কেজরিওয়াল দিল্লিবাসীকে বিভ্রান্ত করছেন!
এর উপর কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেনের সাম্প্রতিক মন্তব্যটি দুই শরিক দলের মধ্যে সম্পর্ক একেবারে তলানিতে পৌঁছে দিয়েছে। মাকেনের দাবি, ২০১৩ সালে কংগ্রেস আপ-কে সমর্থনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আজ তার ফলেই দিল্লির অবনতি হচ্ছে। কংগ্রেসের তরফে এই মন্তব্য শোনার পরই রীতিমতো ঝাঁঝিয়ে উঠেছে আপ।
একটি সাংবাদিক সম্মেলনে এই সমস্ত বিষয় নিয়ে জোট শরিক কংগ্রেসকে তোপ দাগেন আপ-এর রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিং। তাঁর অভিযোগ, অজয় মাকেন কেজরিওয়ালকে 'দেশবিরোধী' বলে অপমান করেছেন। যার প্রেক্ষিতে মাকেনকে কড়া ভাষায় ধিক্কার জানিয়েছেন আপ সাংসদ।
কংগ্রেস নেতৃত্বকে মাত্র ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছেন সঞ্জয় সিং। তাঁর সাফ কথা, এই একদিনের মধ্যেই কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বকে অজয় মাকেনের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে আপ-এর তরফেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।
সঞ্জয় সিং বলেন, 'কংগ্রেসের অজয় মাকেন আসলে বিজেপির স্ক্রিপ্ট অনুসারে কথা বলছেন। যদি কংগ্রেস নেতৃত্ব তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না করে, তাহলে আমরা INDIA শরিকদের সঙ্গে কথা বলব। যাতে কংগ্রেসকেই INDIA থেকে বহিষ্কার করা হয়।'
সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক বৈঠকে সঞ্জয় সিংয়ের পাশেই ছিলেন দিল্লির বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী অতিশী। সঞ্জয় বলেন, কংগ্রেস আসলে আসন্ন দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে জেতানোর চেষ্টা করছে। এবং তার জন্য যা যা করা উচিত, সেটাই করছে তারা।
আরও এক ধাপ এগিয়ে অতিশী অভিযোগ করেন, সন্দীপ দীক্ষিত-সহ একাধিক কংগ্রেস প্রার্থীর নির্বাচনের খরচ নাকি বিজেপি বহন করছে!
অতিশী বলেন, 'কংগ্রেসের আচরণেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়া সেরে ফেলেছে তারা! বিজেপির টাকায় কংগ্রেসের প্রার্থীরা ভোটে লড়ছেন। আমরা শুনেছি, কংগ্রেস প্রার্থী সন্দীপ দীক্ষিতের নির্বাচনী খরচ বিজেপিই দিচ্ছে।'
অতিশীর প্রশ্ন, 'কংগ্রেসের যদি মনে আমরা দেশবিরোধী, তাহলে গত লোকসভা নির্বাচনে আমাদের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে লড়াই কেন করল?'