বাংলা নিউজ > ঘরে বাইরে > করোনা পরীক্ষায় গাফিলতির জন্য কঠিন ফল ভুগবে কেরালা, সতর্ক করলেন বিশেষজ্ঞরা

করোনা পরীক্ষায় গাফিলতির জন্য কঠিন ফল ভুগবে কেরালা, সতর্ক করলেন বিশেষজ্ঞরা

কেরালায় বোর্ড পরীক্ষা দিতে আসা স্কুলছাত্রদের দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের আগে। ছবি: এপি। (AP)

ভারতে প্রতি ১০ লাখ নাগরিক পিছু প্রতিদিন ৫৩৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয় এবং এই ভিত্তিতে সারাবিশ্বে দেশের স্থান ৫২ তম।

কেরালায় করোনা সংক্রমণ পরীক্ষার হার অত্যন্ত কম। এখনই ব্যবস্থা না নিলে লাফিয়ে বাড়বে আক্রান্তের সংখ্যা, সতর্ক করলেন বিশেষজ্ঞরা।

গত জানুয়ারি মাসে ভারতে প্রথম করোনা সংক্রমণের হদিশ পাওয়া যায় কেরালায়। কিন্তু তার পরে সংক্রমণ থেকে সেরা ওঠা রোগীর সংখ্যাবৃদ্ধি এবং কম মৃত্যুহারের কারণে প্রশংসিত হয় কেরালা সরকার। তবে সম্প্রতি রাজ্যের করোনা পরীক্ষার হার কমতে থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

পরিসংখ্যান বলছে, গত ৪ মাসে মাত্র ৫৮,২০০টি করোনা পরীক্ষা হয়েছে কেরালায়, যা মোট জাতী পরীক্ষার হারের ভিত্তিতে যথেষ্ট কম। উলটো দিকে, মার্চের গোড়ায় প্রথম সংক্রমণের খবর পাওয়ার পর থেকে গত ২৭ মে পর্যন্ত কর্নাটকে ২,২৮,৯১৪ এবং অন্ধ্র প্রদেশে ৪,১২,৭১৪টি করে পরীক্ষা হয়েছে। 

গত মঙ্গলবার কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে লেখা চিঠিতে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন-এর তরফে সতর্ক করে লেখা হয়েছে, ‘বাস্তব পরিস্থিতি বুঝতে প্রতি ১ লাখ জনসংখ্যায় কমপক্ষে ১০০ পরীক্ষা করা জরুরি। অন্যান্য রাজ্য পরীক্ষার পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে অনেক এগিয়ে গিয়েছে। বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতি।ষ্ঠানগুলিতেও পরীক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োগ করা দরকার।’

চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, রাজ্য সরকারের তরফে করোনা সংক্রমণ জনিত কতোনও তথ্য আইএমএ-কে জানানো হচ্ছে না। জানানো হচ্ছে না রোগী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যও। সংস্থার দাবি, সমস্ত চিকিৎসাকর্মীর স্বার্থে এই তথ্য প্রকাশ করা জরুরি। 

সমালোচনার চাপে পড়ে বুধবার কেরালার মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন জানান, ‘আমরা পরীক্ষার হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করছি আগামী সপ্তাহান্তে কমপক্ষে দৈনিক ৩,০০০ নমুনা পরীক্ষা করা শুরু হবে।’

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, গতকালই কেরালায় ১,৪০০ নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ভারতে প্রতি ১০ লাখ নাগরিক পিছু প্রতিদিন ৫৩৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয় এবং এই ভিত্তিতে সারাবিশ্বে দেশের স্থান ৫২ তম।

বিশেষজ্ঞদের মতে, গত কয়েক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ার ফলে বর্তমান নমুনা পরীক্ষার হারও প্রয়োজনের তুলনায় বেশ কম। আইএমএ রাজ্য সভাপতি চিকিৎসক আব্রাহাম ভারঘিস জানিয়েছেন, ‘গত দুই মাস ধরে সরকারকে বলছি পরীক্ষার হার বাড়ানোর জন্য। পরীক্ষার হার যে সাংঘাতিক কম, তা সাধারণ লোকও বলবে। পরীক্ষা না করালে কী করে বাস্তব চিত্র দেখতে পাবেন? পরীক্ষার হার না বাড়ালে রাজ্যের অবস্থা সঙ্গিন হয়ে দাঁড়াবে।’

সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ জয়প্রকাশ মাল্লিইলও জানিয়েছেন, ‘সংক্রমণ রোখার সেরা হাতিয়ার নিয়মিত নমুণা পরীক্ষা করা। এর আগে আমাদের কাছে একাধিক দেশের দৃষ্টান্ত রয়েছে। কেরালার উচিত এবার নিয়মিত পরীক্ষার হার বাড়ানো।’

বন্ধ করুন