সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে যে দিন জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা পেড়ে নেওয়া হল, সে দিন প্রতিবাদ জানালে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি দেখতে হত না। শনিবার মুম্বইয়ে এক আলোচনাচক্রে অংশগ্রহণ করে এই মন্তব্য করলেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের সভাপতি ঐশী ঘোষ।
মুম্বই কালেক্টিভ আয়োজিত ‘স্টুডেন্টস অ্যাজ দ্য ভ্যানগার্ড’ আলোচনাসভায় আমন্ত্রিত ঐশী তাঁর ভাষণে জানান, ‘আমাদের সংবিধানের উপরে প্রথম আঘাত হানা হয় সেই দিন, যে দিন কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিল করা হয়েছিল।’
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি, এনপিআর-সহ কেন্দ্রীয় সরকারের সাম্প্রতিক প্রকল্পগুচ্ছের বিরোধিতায় দেশজুড়ে আন্দোলনে নেমেছেন পড়ুয়ারা। এ দিন সেই প্রেক্ষিতে ঐশী বলেন, ‘এ শুধু ছাত্রদের লড়াই নয় এবং তারা একা তা শেষ করতে পারে না। কিন্তু আমাদের আশা, সমাজের প্রতিটি ভাগ একদিন সজাগ হবে এবং আমাদের লড়াইয়ে শামিল হবে।’
পড়ুন: শাহিন বাগ, জেএনইউ ও জামিয়ায় গিয়ে CAA বিরোধী বিক্ষোভকারীদের কুর্নিশ থারুরের
ঐশীর প্রশ্ন, ‘কেন আমাদের কোনও ছাত্রের খুন, আত্মহত্যা বা গুলি করে হত্যার জন্য অপেক্ষা করতে হবে? অথবা কোনও ঐশী ঘোষ লোহার রড খাবে বলে প্রতীক্ষায় থাকতে হবে? এ শুধু আমাদের ছাত্রদের লড়াই নয়।’
এর পর কেন্দ্র-বিরোধী আন্দোলনে নারীর ভূমিকা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি জানান, বর্তমানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভবিষ্যতে ইতিহাস চর্চার সময় শাহিনবাগ ও অন্যত্র আন্দোলনরত মহিলাদের কথা গুরুত্বের সঙ্গে উচ্চারিত হবে।
পড়ুন: বাতিল হোক CAA, দাবি অমর্ত্যর, JNUতে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও সরব নোবেলজয়ী
ছাত্রদের প্রতিষ্ঠান-বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণের বিষয়ে ঐশীর দাবি, ‘আমরা যদি পাঠ্যক্রমে গণতন্ত্র সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করি, তাহলে তা সমাজে প্রয়োগের বিষয়েও পদক্ষেপ জরুরি। ছাত্রদের কাজ শুধু হিটলার সম্পর্কে জানাই নয়, ভালো ছাত্রদের উচিত তাকে চিহ্নিত করে ভারতীয় সমাজ থেকে তাকে বহিষ্কার করাও।’ভাষণের শেষে পৌঁছে রোহিত ভেমুলা ও ফতিমা লতিফের মৃত্যুর জন্য প্রতিষ্ঠানের দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলেন ঐশী। উল্লেখ করেন জেএনইউ-এর নিখোঁজ ছাত্র নাজিব আহমেদের ঘটনাও। তাঁর কথায়, ‘তখন যদি আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানে ঘাঁটি গেড়ে বসা ইসলাম-আতঙ্কের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতাম, তাহলে বর্তমান পরিস্থিতি কোনও দিন উদয় হত না।’