১৯৯৩ সালে মুম্বাইয়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের মামলায় দোষী সাব্যস্ত গ্যাংস্টার আবু সালেম এবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন। বম্বে হাইকোর্টে তিনি জেল থেকে দ্রুত মুক্তির আর্জি জানিয়েছেন। তাঁর আবেদন, ইতিমধ্যেই তিনি ২৫ বছরের সাজা সম্পন্ন করেছেন। তাই তাঁকে জেল মুক্তি দেওয়া হোক। বিচারপতি সারং কোতোয়াল এবং বিচারপতি এসএম মোদকের ডিভিশন বেঞ্চে আগামী ১০ মার্চ এই মামলার শুনানি রয়েছে।
আরও পড়ুন: আবু সালেমকে ২৫ বছরের বেশি জেলে রাখা হবে না! কেন্দ্রকে প্রতিশ্রুতি মনে করাল আদালত
মামলার বয়ান অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বরে একটি বিশেষ আদালত তাঁর আগাম মুক্তির আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল। এরপর গত ৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের আবেদন জানান আবু সালেম। আদালতে তাঁর দেওয়া ২৫ বছরের কারাদণ্ডের হিসেবের মধ্যে বিচারাধীন বন্দি হিসেবে জেলে কাটানো সময় উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও, ভারতে প্রত্যর্পণের আগে পর্তুগিজ কারাগারে কাটানো সময় এবং তিনি যে পরিমাণ সাজা মকুব পেয়েছিলেন সেগুলিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তাঁর আর্জি, যেহেতু তিনি ২৫ বছরের সাজা পূর্ণ করেছেন তাই ভারত ও পর্তুগালের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তির শর্তাবলী এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কমানোর সময় নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী তাঁকে মুক্তি দেওয়া উচিত।
উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালের ১৬ জানুয়ারি বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্তের বাড়ি সহ মুম্বইয়ের বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র ও গোলাবারুদের চালান সরবরাহের অভিযোগে সালেমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সেই ঘটনার প্রায় দু'মাস পর ১৯৯৩ সালের ১২ মার্চ মুম্বইয়ের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১২টি বিস্ফোরণ ঘটে। যার মধ্যে ছিল বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ, জাভেরি বাজার, এয়ার ইন্ডিয়া ভবন এবং ফাইভ স্টার হোটেল সি রক এবং জুহু সেন্টোর। সেই বিস্ফোরণে ২৫৭ জন নিহত এবং ৭১৩ জন গুরুতর আহত হয়েছিলেন।
বিস্ফোরণের পর সালেমের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল ওঠে। অভিযোগ ছিল, তিনি জাল পাসপোর্ট ব্যবহার ভারত ছেড়ে চলে যান। পরে ২০০২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বরে পর্তুগালের লিসবনে তাঁকে আটক করা হয়। এরপর ভারত সরকার প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানায়। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর ২০০৫ সালের ২৪ নভেম্বর তাঁকে ভারতে প্রত্যর্পণ করা হয় এবং গ্রেফতার করা হয়। মামলা চলে আদালতে। পরে ২০১৭ সালের ৭ সেপ্টেম্বর মুম্বইয়ের একটি আদালত সালেমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। পরে সুপ্রিম কোর্ট সাজা কমিয়ে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়। যার মধ্যে বিচারাধীন অবস্থায় জেলে থাকার সময়কাল এবং সাজা মুকুবের বিষয়টি ছিল। পরে ২০২৪ সালের অক্টোবরে সালেম সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত আদালতে দ্রুত মুক্তির জন্য একটি আবেদন করেন। তবে আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। এরপরই উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন সালেম।